ব্রিটেনে পরীক্ষার ফল দেখেই ভারতে শুরু হবে কোভিশিল্ড প্রয়োগ
তৈরি হয়ে গিয়েছে ৪ কোটি ডোজ। জানুয়ারি মাসের মধ্যেই আরও প্রায় ৩০ কোটি ডোজ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনে (CDSCO) জমা পড়ে গিয়েছে চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়ালের বিস্তারিত রিপোর্টও। দেওয়া হয়েছে বিদেশে চলা মানবদেহে ট্রায়ালের তথ্য। ফলে অতি শীঘ্রই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ (Covishield) দেওয়ার কাজ শুরু হতে চলেছে, সেটা স্পষ্ট।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি এই টিকা প্রায় ১০০ শতাংশ কার্যকর বলেই দাবি করেছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। বিদেশে এরাই তৈরি করছে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন (Oxford Vaccine)। ভারতে সিরাম। তাই অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই দাবিতে ভারত অত্যন্ত আশাবাদী। তাও সাবধানতা অবলম্বনে ব্রিটেনের ছাড়পত্রের অপেক্ষা করছে নয়াদিল্লি। ব্রিটেনে আগামী ৪ জানুয়ারি কোভিশিল্ড দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা, স্থায়িত্ব এবং তা কতটা নিরাপদ, খতিয়ে দেখছে ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘মেডিসিন অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলারেটরি এজেন্সি’।
তাদের অভিমত জেনে নিয়ে ভারতেও ইমার্জেন্সি বৈঠক ডেকে সিরামের ‘কোভিশিল্ড’কে ছাড়পত্র দিতে পারে সিডিএসসিও। ইমারজেন্সি ইউজের ছাড়পত্র চেয়ে তিনটি ভ্যাকসিন কোম্পানির আবেদন জমাও রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাকসিনে’র এখনও ফেজ থ্রির ট্রায়াল চলছে। ফাইজার তাদের বাড়তি তথ্য জমাই দেয়নি। সেদিক দিয়ে পরীক্ষার যাবতীয় তথ্য দিয়েছে একমাত্র সিরাম। তাই সব কিছু ঠিক থাকলে কোভিশিল্ডই হতে চলেছে ভারতীয়দের জন্য প্রথম করোনার টিকা। ২৮ দিনের তফাতে এই ভ্যাকসিনটির দু’টি ডোজ নিতে হবে।
টিকাকরণ কীভাবে হবে, তা নিয়ে আজ এবং আগামীকাল চার রাজ্যে শুরু হচ্ছে মক ড্রিল বা নকল টিকাকরণ। যেখানে স্রেফ ভ্যাকসিনটুকু বাদ দিয়ে যাবতীয় ব্যবস্থাই থাকবে। গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম এবং পাঞ্জাবে এই মহড়া হবে। ভ্যাকসিন কোল্ড চেইনের মাধ্যমে টিকাকরণ কেন্দ্রে পৌঁছানো থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। দেখে নেওয়া হবে, কোথাও কোনও পয়েন্টে প্রস্তুতি এখনও কিছু বাকি আছে, নাকি সব রেডি। তারপর অপেক্ষা শুধু ভ্যাকসিনের দিন ঘোষণার।
এদিকে, গোটা দেশে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র আড়াই লক্ষের কিছু বেশি (২ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৯০) হওয়ায় খুশি কেন্দ্র। ১৭০ দিন পর এত কম সক্রিয় আক্রান্তের তথ্য মিলেছে। একইভাবে ছ’মাস পর দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও ১৯ হাজারের কম। গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশে ১৮ হাজার ৭৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৯৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৩৮ জন নাগরিক। সুস্থতার হার বেড়ে হয়েছে ৯৫.৮২ শতাংশ। ফলে, এবার ভ্যাকসিন এলেই কাবু হবে করোনা, আশায় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।