পাড়ায় সমাধান কর্মসূচি: প্রতি জেলায় ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাজ্যের
‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে। তার পাশাপাশি সরকারি পরিষেবাকে আরও তৃণমূলস্তরে নিয়ে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর ঘোষণামতো স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে শুরু হয়েছে নতুন কর্মসূচি—‘পাড়ায় সমাধান’। বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এলাকাগত ছোটখাট সমস্যা নিরসনে উদ্যোগ নিচ্ছেন সরকারি আধিকারিকরা। আর এই প্রকল্প রূপায়ণে প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি জেলার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা আগাম বরাদ্দ করল নবান্ন। ওই টাকায় স্থানীয় মানুষের দাবি অনুযায়ী নানা ধরনের কাজ শুরু হয়ে যাবে। সম্প্রতি এব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে অর্থদপ্তর। নোডাল এজেন্সি হিসেবে এই কর্মসূচির জন্য জেলাগুলিকে অর্থ বরাদ্দ করবে পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান এবং প্রকল্প নজরদারি (পিএসপিএম) দপ্তর।
গত ২ জানুয়ারি থেকে সূচনা হয়েছে এই প্রকল্পের। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গোটা রাজ্যের প্রতিটি পাড়ায় যাবেন সরকারি আধিকারিকরা। প্রাথমিক পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়েই ‘কমিউনিটি অ্যান্ড নেইবারহুড গ্যাপ’ সংক্রান্ত প্রায় ১০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছিল। এর পাশাপাশি স্থানীয়রা সরকারি আধিকারিকদের কাছে যে সব সমস্যার কথা তুলে ধরবেন, সেগুলির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই সবের বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট আসবে ধরে নিয়ে প্রতি জেলাকে আগাম ৫০ লক্ষ টাকা করে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থদপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, জেলাশাসকই দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন এজেন্সিকে অর্থ বরাদ্দ করবেন। পরবর্তীকালে কোনও কাজের জন্য অতিরিক্ত টাকা প্রয়োজন হলে পিএসপিএম দপ্তরের কাছে তা চাওয়া যাবে। তবে তার জন্য জেলাগুলিকে নির্দিষ্ট প্রোফর্মায় আগে বরাদ্দ করা অর্থের বিস্তারিত হিসেব দিতে হবে। কাজ শেষ হওয়ার পর একইভাবে সামগ্রিক হিসেব পিএসপিএম দপ্তরের কাছে পেশ করবে জেলা প্রশাসন।
‘পাড়ায় সমাধান’ (Paray Samadhan) (কর্মসূচির অধীনে টেন্ডার ডাকার ব্যাপারে নিয়মকানুনও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে অর্থদপ্তর। গ্রামীণ এলাকায় বিডিও এবং জেলার পুরসভা এলাকায় জেলাশাসকদের হাতে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কাজে প্রশাসনিক, আর্থিক অনুমোদন ও টেন্ডার ডাকার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরসভা ও বৃহত্তর কলকাতা এলাকায় এই দায়িত্ব পেয়েছে যথাক্রমে কলকাতা পুরসভা ও কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ।
পাঁচ লক্ষের ঊর্ধ্বে, ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয়ে কোনও কাজের টেন্ডার ডাকার ক্ষমতা অবশ্য দেওয়া হয়েছে একমাত্র জেলাশাসককে। তবে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেট থেকে অনুমোদন নিতে হবে। নথিপত্র পরীক্ষা করে অনুমোদন মিললে তবেই দরপত্র আহ্বান করতে পারবেন জেলাশাসক। ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচিতে দ্রুত কাজ শেষ করাই ‘পাখির চোখ’ সরকারের। তাই গোটা টেন্ডার প্রক্রিয়ার সময়সীমা কমানো হয়েছে। অ্যাসিস্ট্যান্ট ও সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে যথাক্রমে ১৫ এবং ৫ লক্ষ টাকার কাজের টেন্ডার গ্রহণ ও কারিগরি অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতাও দিয়েছে অর্থদপ্তর। অনেকে ক্ষেত্রেই দরপত্র ডাকাও শুরু হয়েছে। দ্রুত সেগুলির বাস্তবায়ন হবে।