সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে পুরসভা ঘোষণা – খুশি ফালাকাটা

২০১৬ সালের নির্বাচনে ফালাকাটায় সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ছিল ১৬ হাজার ভোটের। তবে লোকসভা নির্বাচনে ফালাকাটায় ২৭ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে এবার রাজ্য সরকার গড়ার ভোট। তাই এলকার উন্নয়নকেই মূল হাতিয়ার করছে শাসকদল তৃণমূল।

January 29, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

খেলাধুলোর জন্য আউটডোর স্টেডিয়াম তৈরির কাজ চলছে। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল (Super Specialty Hospital) তৈরি হওয়ায় চিকিৎসার জন্য আর কথায় কথায় জেলা হাসপাতালে ছুটতে হয় না। পঞ্চায়েত এলাকায় তৈরি হয়েছে একাধিক পাকা সেতু। পথশ্রী প্রকল্পে (Pathashree Abhijan) হয়েছে ঝা চকচকে পাকা রাস্তা। ফলে যাতায়াতের সমস্যা মিটেছে। ব্লকের রাইচেঙ্গায় তৈরি হওয়া কৃষকমাণ্ডি রাজ্য সেরার তকমাও পেয়েছে। সাব মার্সিবলের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল চাষের জমিতে সেচ হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে। ফলে এলাকায় আলু চাষে বিপ্লব এসেছে। আর এসব উন্নয়নই নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে এবার ফালাকাটা (Falakata)বিধানসভা কেন্দ্রে। যাঁর হাত ধরে ফালাকাটায় উন্নয়নের এই জোয়ার, তিনি শাসকদলের দু’বারের প্রয়াত বিধায়ক অনিল অধিকারী।

অনিলবাবুকে বলা হয় ফালাকাটার উন্নয়নের নব রূপকার। এলাকার বিরোধীরাও কার্যত আড়ালে বা চায়ের দোকানের আড্ডায় এ কথা স্বীকার করে নেন। এখানেই শেষ নয়। আরও আছে। অনিলবাবুই ফালাকাটাকে পুরসভা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ভোটের মুখে ফালাকাটাকে পুরসভা ঘোষণা করে এবার মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রয়াত বিধায়ক অনিলবাবুর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। শাসক দলের নেতাদের দাবি, এই উন্নয়নের উপর ভর করেই ফালাকাটায় ফের মানুষ তৃণমূলকেই বিধানসভা নির্বাচনে ভোট বৈতরণী পার করাতে সাহায্য করবে। বিরোধীরা অবশ্য যথারীতি তৃণমূলের এই দাবিকে মান্যতা দিতে নারাজ। বিরোধীদের অভিযোগ, ফালাকাটায় সিকি ভাগ উন্নয়ন হয়েছে। সেই সিকি ভাগ উন্নয়নকেই ফুলে ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে। তাই ভোটে জিততে এখন পুরসভার ললিপপ দেখানো হচ্ছে। ফালাকাটায় আদৌ পুরসভা হবে না।

এই উন্নয়ন নিয়ে কী বলছেন ফালাকাটার সাধারণ বাসিন্দারা? ফালাকাটা বিধানসভার সাতপুকুরিয়ার বাসিন্দা নরকান্ত রায় বলেন, বাম জমানায় যাতায়াতের যে সমস্যা ছিল, এখন আর তা নেই। আগে চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালে ছুটতে হতো। ফালাকাটাতেই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হওয়ায় এখন আর চিকিৎসার জন্য আমাদের কথায় কথায় জেলায় ছুটতে হয় না। কাজেই উন্নয়ন হয়নি একথা বলি কী করে? ফালাকাটা বিধানসভার গুয়াবরনগরের বাসিন্দা নির্মল বর্মন বলেন, আগে কৃষিপণ্যের দাম পাওয়া যেত না। রাইচেঙ্গায় কৃষকমাণ্ডি হওয়ায় এখন সব ধরনের কৃষিপণ্যের দাম মিলছে। যা বাম আমলে কল্পনার অতীত ছিল।

উন্নয়ন নিয়ে ফালাকাটায় যে একেবারেই ক্ষোভ নেই তা বলা যাবে না। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ২০১৪ সালে সাবেক জলপাইগুড়ি জেলা ভেঙে আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা হয়েছে। তারপর মুজনাই দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। কিন্তু ফালাকাটা আজও মহকুমা হল না। অনেকে এও বলছেন, তৃণমূল ফের ক্ষমতায় এলে ফালাকাটার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।

তৃণমূলের (Trinamool) ফালাকাটা ব্লক সভাপতি সুভাষ রায়েরও দাবি, আমাদের বিশ্বাস মানুষ ফালাকাটার এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে ফের তৃণমূলকেই ক্ষমতায় আনবে। বিকল্প কোনও শক্তিকে নয়। ফালাকাটায় ঢালাও উন্নয়ন হয়েছে। ফালাকাটাকে পুরসভা করার দাবিও পূরণ হয়েছে। ফলে আমরা এবারও যে জিতছি এবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

যদিও বিজেপির (BJP) আলিপুরদুয়ার জেলা সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মন বলেন, বিধানসভার বিভিন্ন এলাকায় যে রাস্তাঘাট হয়েছে তা কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায়। তাছাড়া উন্নয়নের অর্থ নিয়ে এখানে দেদার নয়ছয় করা হয়েছে। আর ভোটে জেতার জন্যই রাজ্যের শাসক দল ফের পুরসভা করার ললিপপ দেখাচ্ছে। ফালাকাটা আদৌ পুরসভা হবে না। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা চলছে।


২০১৬ সালের নির্বাচনে ফালাকাটায় সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ছিল ১৬ হাজার ভোটের। তবে লোকসভা নির্বাচনে ফালাকাটায় ২৭ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে এবার রাজ্য সরকার গড়ার ভোট। তাই এলকার উন্নয়নকেই মূল হাতিয়ার করছে শাসকদল তৃণমূল।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen