সিউড়িতে বিজেপিতে বড় ভাঙন
ফের বিজেপিতে(BJP) ভাঙনের ইঙ্গিত। এবার সিউড়িতে(Siuri) নতুন দল গঠনের জন্য শহরের নানা প্রান্তে পোস্টারের দেখা মিলল। সেখানে নতুন দলের নাম ‘শিবশক্তি পার্টি’(ShivShakti Party) বলে লেখা হয়েছে। বিজেপি কর্মীদের ওই নতুন দলে যোগ দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। দরজায় যখন বিধানসভা ভোট কড়া নাড়ছে সেসময় বিজেপি ভাঙার এমন পোস্টারে ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছেন দলের জেলা নেতৃত্ব। এনিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
যদিও বিজেপির দাবি, তৃণমূলই(TMC) এই ধরনের পোস্টার লাগিয়ে আমাদের বদনাম করার চেষ্টা করছে। কারণ, লোকসভা ভোটে সিউড়ি বিধানসভায় শাসক দলের থেকে এগিয়েছিল বিজেপি। তাই বিধানসভা ভোটে আমাদের কর্মীদের মনোবল ভাঙতে তৃণমূল এই চক্রান্ত করেছে। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের পাল্টা দাবি, তৃণমূল এত সস্তা রাজনীতি করে না। বরং বীরভূম জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি কর্মীরা দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে নতুন দল গঠনের পোস্টার পড়েছে সিউড়িতে।
বুধবার সিউড়িতে বীরভূম জেলা স্কুলের দেওয়ালে, বাসস্ট্যান্ডে, বিভিন্ন পাড়ায় এই বিতর্কিত পোস্টার দেখা যায়। যেখানে হলুদ রঙের কাগজে লেখা রয়েছে ‘জয় শ্রীরাম/ভারত মাতা কি জয়। শিব শক্তি পার্টি।’ তার নীচে লেখা আছে ‘আমরা একটি নতুন দল গঠন করতে চলেছি। যারা বিজেপিতে থেকে হিন্দুদের জন্য কাজ করতে পারেননি তাঁরা আমাদের দলের সদস্য হন।’ কারা এই পোস্টার শহরের দেওয়ালে দেওয়ালে লাগালেন তা এখনও জানা যায়নি। তবে কেউ যোগ দিতে চাইলে কোথায় যোগাযোগ করবেন সে বিষয়ে ওই পোস্টারে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু নির্বাচনের আগে এমন পোস্টার পড়ায় শহরের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে সিউড়িতে দলের যুব মোর্চার সহ-সভাপতি অনিন্দ্য সিংহ এবং সম্পাদক কুন্তল ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দেন। সিউড়িতে দলের ব্যাপক গোষ্ঠী কোন্দল এবং বিবাদের জেরে তাঁরা দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এরপর সাঁইথিয়াতেও অনুব্রত মণ্ডলের সভায় বেশ কয়েকজন বিজেপি যুব মোর্চার কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁরাও দল ছাড়ার জন্য গোষ্ঠী কোন্দলকেই দায়ী করেছিলেন। এই ঘটনার পর সিউড়িতে বিজেপি ভেঙে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পোস্টার পড়ায় ব্যাপক অস্বস্তিতে দলের জেলা নেতৃত্ব।
এই প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অর্জুন সাহা বলেন, তৃণমূল রাতের অন্ধকারে এইসব পোস্টার লাগিয়ে বিজেপিকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। ওরা আসলে বুঝতে পারছে না আমরা নির্বাচনে কীভাবে সংগঠন সাজাচ্ছি। লোকসভাতেও বুঝতে পারেনি। সেই ভোটে আমরা সিউড়িতে তৃণমূলকে হারিয়েছি।
এই পোস্টার নিয়ে বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের শহর সভাপতি মহম্মদ আব্দুল শফি বলেন, ওদের দলের ভাঙন আমাদের দলের জনসভার মঞ্চে খুব পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। বিজেপি থেকে লোক এসে আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন। ওদের দলটাতে এত গোষ্ঠী কোন্দল যে অনেকেই দল ছেড়ে পালিয়ে বাঁচতে চাইছেন। যাঁরা লজ্জার খাতিরে তৃণমূলে আসতে পারছে না, তাঁরাই বিজেপি ছেড়ে নতুন দল তৈরি করতে চান। অর্থাৎ বিজেপিকে ত্যাগ করাটাই ওঁদের এখন প্রধান লক্ষ্য। ওঁদের হয়ে কোনও পোস্টার আমাদের দলের লোকেরা কোথাও লাগাননি। এসবই মিথ্যা অভিযোগ।