সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় মহিলাদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে

রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও সেন্টার অব এক্সেলেন্সের সংখ্যা এখন ২৬টি।

March 6, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বিএমওএইচ, সুপার, অধ্যক্ষ মানেই ‘স্যার’, ধারণা পাল্টাচ্ছে। রাজ্যজুড়েই স্বাস্থ্য প্রশাসনে মহিলাদের(Women) সংখ্যা বাড়ন্ত এখন। তাঁদের ম঩ধ্যে বহু মহিলা স্বাস্থ্য প্রশাসক দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন। অপরাধ-অন্যায়-দুর্নীতিতে ‘নো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে চলছেন। কর্মী-চিকিৎসকরাও খোলা মনে বলছেন, ‘ম্যাডাম’দের(Madam) শাসন বাড়ছে সরকারি হাসপাতালে(Govt Hospitals)। বহু ক্ষেত্রেই সফলভাবে পরিচালনা করছেন তাঁরা। নারীশক্তির জয়জয়কার বললে অত্যুক্তি হবে না।

স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রধান জায়গা গ্রামীণ হাসপাতাল তথা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেখানকার শীর্ষপদ বিএমওএইচ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য পরিষেবার সর্বোচ্চ স্তর মেডিক্যাল কলেজের দু’টি শীর্ষপদ এমএসভিপি তথা উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষ পদে এখন মহিলাদের ছড়াছড়ি। অথচ এক থেকে দেড় দশক আগের স্বাস্থ্য প্রশাসনে ডাঃ জয়শ্রী মিত্র ঘোষ, ডাঃ সঞ্চিতা বক্সির মতো হাতেগোনা একটি-দু’টি নাম ছাড়া তেমন কেউ ছিলেনই না।

রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও সেন্টার অব এক্সেলেন্সের সংখ্যা এখন ২৬টি। সেগুলিতে অধ্যক্ষ, সুপার, অধিকর্তা, ডেপুটি সুপার (মেডিক্যাল) পদ সংখ্যা ৬৬টি। ন’টিতেই অন্যতম শীর্ষপদে আসীন মহিলা প্রশাসকরা। কলকাতা, বর্ধমান এবং রামপুরহাট তিন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা পদে রয়েছেন তিন অধ্যাপিকা—ডাঃ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাঃ সুহৃতা পাল ও ডাঃ করবী বড়াল। চারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যক্ষা, নয়তো সুপার পদেও রয়েছে মহিলা প্রশাসক। সেগুলি হল ট্রপিক্যাল, আইডি, চিত্তরঞ্জন সেবাসদন এবং ইনস্টিটিউট অব হেমাটোলজি। বর্তমানে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের সুপার, ডেপুটি সুপার দু’জনে‌ই অধ্যক্ষা। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপারও মহিলা। জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ১, ২, ৩ এবং সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা এসিএমওএইচ। সবমিলিয়ে পদ রয়েছে ৩০২টি। যেখানে এর আগে একজন মহিলাকেও দেখা যেত না, সেখানে এখন রয়েছেন ৩২ জন মহিলা স্বাস্থ্য প্রশাসক।

কলকাতা লাগোয়া হাওড়াতেই সেখানে রয়েছে মহিলা সিএমওএইচ—ডাঃ ভবানী দাস।
স্বাস্থ্য দপ্তরের নবীন ক্যাডার বলে পরিচিত সহকারী সুপার পদটি। ৩৬২ জন কর্মরত সহকারী সুপারের মধ্যে মহিলার সংখ্যাই ১২৭ জন—প্রায় ৩৫ শতাংশ। পুরুষ প্রশাসকদের সঙ্গে সমান তালে কাজ করছেন তাঁরা। তাঁদের রাজ্যব্যাপী অন্যতম সংগঠনের কর্তা সৈয়দ জিয়উল মুস্তাফা আল কাদেরি বলেন, ‘যতদিন যাচ্ছে, আমাদের ক্যাডারে মহিলাদের সংখ্যা বাড়ছে।’ ৩৪১ জন বিএমওএইচের মধ্যে মহিলা বিএমওএইচের সংখ্যা ১০ শতাংশেরও বেশি। জানিয়েছেন দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘মহিলা স্বাস্থ্য প্রশাসকদের সংখ্যা বেড়েছে। যথেষ্ট ভালো কাজও করছেন তাঁরা।’


আর জি কর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ডিরেক্টর, রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা), ইএসআই জোকার ডিন—২০ বছরের বেশি সময় রাজ্য স্বাস্থ্য প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন ডাঃ জয়শ্রী মিত্র ঘোষ। বলেন, ‘সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা সবটাই ষোলো আনা আছে মেয়েদের মধ্যে। যাঁরা পরিবার সফলভাবে চালান, প্রশাসনও চালাতে পারেন।’ রামপুরহাটের অধ্য‌ক্ষা করবী দেবী বলেন, ‘সব ঠিক করতে মেয়েরাই পারেন। পারছেন। পারবেনও।’ 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen