নেত্রীর মাহাত্ম্য যে তিনি অভিমানী কর্মীর মানভঞ্জন করতে চেয়েছেন: সুব্রত
প্রথম দফার ৩০টি আসনে যখন বাংলায় ভোটগ্রহণ চলছে, তখনই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় একটি অডিয়ো টেপ ঘিরে। ওই অডিয়ো টেপের সত্যতা আনন্দবাজার ডি়জিটাল যাচাই করেনি। তবে রাজ্য বিজেপি-র দাবি, ফোনের একপ্রান্তে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অন্য প্রান্তে বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল।
ওই অডিয়ো টেপে শোনা যাচ্ছে, এক মহিলাকণ্ঠ (যা মমতার বলে দাবি) প্রলয়ের কাছে ভোটে সাহায্য করার আবেদন জানাচ্ছে। যদিও প্রলয় ওই আবেদনকারিণীকে বলছেন, দলের বিরুদ্ধে গিয়ে তিনি তৃণমূলকে সমর্থন করবেন না।
“মমতা কাউকে ফোন করলেন, আর সেটা সঙ্গে সঙ্গে টেপ করে একটি বিশেষ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া হল কেন? আমরা তদন্ত করব, কে করল কেনই বা করল?” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন কর্মীকে কলের রেকর্ডিং প্রসঙ্গে এভাবেই সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee)।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, “আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলের এক প্রাক্তন কর্মীর মানভঞ্জনের চেষ্টা করেছেন। এইরকম সৌজন্যই তো থাকা উচিৎ রাজনীতিতে। আমিও যখন মান করে বাড়িতে বসেছিলাম আমাকে ইন্দিরা গান্ধী, প্ৰিয়রঞ্জন দাস মুন্সিরা ফোন করেছিলেন। তাতে কি ওনারা দুর্বল এটা প্রমাণিত হয়?”
এছাড়াও মন্ত্রী এদিন বিজেপির (BJP) সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়েও কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “বিজেপি সব বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে ব্যর্থ তাই অন্যান্য বুথ থেকে পোলিং এজেন্ট আনছে। এরপর অন্যান্য রাজ্য থেকেও আনবে। এটি অগণতান্ত্রিক। একটি দলের ডেপুটেশনে এর আগে কখনো এতো বড় নিয়ম বদলে যায়নি। বিজেপি কেন্দ্রের শাসক দল তাই তাদের সুবিধে পাইয়ে দেওয়া হয়। আমরা চাই এবিষয়ে সর্বদলীয় বৈঠক হোক।”
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, নিজের দলের পুরনো কোনও কর্মীকে তাঁর প্রাক্তন নেতা বা নেত্রী ফোন করতেই পারেন। তাতে অন্যায় বা অস্বাভাবিক কিছু নেই। সেক্ষেত্রে ওই কণ্ঠস্বর যদি মমতারও হয়ে থাকে, তাতেও কিছু অস্বাভাবিক নেই। বিজেপি জানে তারা নন্দীগ্রামে (Nandigram) খারাপ ফল করবে, তাই মরিয়া হয়ে এই কাজ করেছে।
এবিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও বিজেপি কর্মীকে নয়, তৃণমূলের প্রাক্তন কর্মীকে ফোন করেছিলেন। নেত্রী বার বার প্রকাশ্য মঞ্চে যারা বিশ্বাসঘাতক নয় অভিমান করে দল ছেড়ে গেছিলেন তাদের ফিরে আসার আবেদন জানিয়েছেন। এইজন্যেই দলটির নাম তৃণমূল কংগ্রেস।”
কুণাল চ্যালেঞ্জ করে বলেন, “টেপের খেলা চললে আমরাও টেপ রিলিজ করব। কোন বিজেপি নেতা তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে কাকে ফোন করেছিলেন তার প্রমাণ আমরাও ঠিক সময় দেব।”