অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে গাছের তলায় বসার নিদান দিয়ে বিতর্কে যোগী রাজ্যের পুলিশ
কোভিড রোগীদের (Covid patients) অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে গাছতলায় বসে থাকার নিদান দিল যোগীরাজ্যের পুলিস। যা নিয়ে তুমুল হইচই শুরু হয়েছে গোটা দেশেই। বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছেন—এটাই তা হলে ডবল ইঞ্জিনে চলা বিজেপির ‘সোনার’ উত্তরপ্রদেশ!
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী যতই বলুন রাজ্যে কোথাও অক্সিজেন (Oxygen) বা বেডের সঙ্কট নেই, শহরের বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে চলছে বেডের আকাল। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে ঝুলছে ‘নো বেড’ লেখা বোর্ড। কোথাও মিলছে না অক্সিজেনও। তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছেন রোগীরা। অক্সিজেন উৎপাদক সংস্থার সামনে দীর্ঘ লাইন। কোথাও কোনও সিলিন্ডার, ক্যান কিংবা কনসেন্ট্রেটর নেই। শুক্রবার রাত থেকেই রোগীর পরিজনদের লাইন প্রয়াগরাজের একটি অক্সিজেন প্লান্টে। সেটি আবার বিজেপি বিধায়ক হর্ষবর্ধন বাজপেয়ির মালিকানাধীন। বর্তমানে প্লান্টটি নিয়ন্ত্রণ করছে যোগী-প্রশাসন। বিশৃঙ্খলা সামলাতে সেখানে প্রচুর পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু, হা-পিত্যেশ করে বসে থাকলেও সেখান থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
সেখানে দাঁড়িয়ে এক যুবক কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘আমার বাবা কোভিড পজিটিভ। তাঁকে ভর্তি করাতে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে বেড়িয়েছি। কোথাও কোনও বেড নেই। চিকিৎসক বাড়িতে রেখে চিকিৎসার কথা বলেছেন। কিন্তু ক’দিন ধরেই বাবার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এখানকার প্রতিটি অক্সিজেন প্লান্টে ঘুরেও একটা সিলিন্ডার পাচ্ছি না। কোথায় পাব, তা জানতে চাইলে পুলিস লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে আসছে। আমরা বড্ড অসহায় বোধ করছি।’
শুধু এই যুবকই নন, কেউ কেউ কোভিড রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে প্রয়াগরাজের ওই অক্সিজেন প্লান্টে হাজির হয়েছিলেন। তাঁদেরও অসহায় অবস্থা। এমনই এক রোগীনির মেয়ে বলছিলেন, ‘কোথাও কোনও অক্সিজেন পাচ্ছি না। হাত উল্টে বসে রয়েছে প্রশাসন। পুলিসের সহযোগিতা চাইলে বলা হচ্ছে, আপনার মা’কে নিয়ে অশ্বত্থ গাছের তলায় চলে যান। সেখানে গিয়ে বসে থাকুন। দেখবেন, শরীরে অক্সিজেনের ভারসাম্য অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে!’ পুলিসের এহেন পরামর্শ পেয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরা। বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।