অসমে আহত বিক্ষোভকারীকে নৃশংসভাবে লাথি, গ্রেপ্তার চিত্রগ্রাহক
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন বিক্ষোভকারী। চোট পাওয়া সেই ব্যক্তিকেই লাথি মারছেন এক চিত্রগ্রাহক! নৃশংস সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত চিত্রগ্রাহককে শেষমেশ গ্রেপ্তার করে অসম পুলিশ (Assam Police)।
পুলিশ সূত্রে খবর, চিত্রগ্রাহকের নাম বিজয় শংকর বানিয়া। পেশায় তিনি ফটোগ্রাফার। বৃহস্পতিবার অনুপ্রবেশকারীদের উচ্ছেদ অভিযান ক্যামেরা বন্দি করার জেলা প্রশাসনের তরফেই নাকি তাঁকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু বিক্ষোভকারী ও পুলিশের সংঘর্ষে রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ঢোলপুর-গরুখুঁটি এলাকা। অনুপ্রবেশকারীদের উচ্ছেদ করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে দখলদারদের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পুলিশের গুলিতে দু’জনের মৃত্যু হয়। আহতও হন কয়েকজন পুলিশকর্মী।
পুলিশের অভিযোগ, তাদের কাজে বাধা দিচ্ছিল দখলদাররা। উচ্ছেদকার্যে বাধা দিতে অতর্কিতে পুলিশের উপরে শুরু হয় পাথর বৃষ্টি। পাথরের আঘাতে এক মহিলা কনস্টেবল-সহ ৮ পুলিশ কর্মী আহত হন। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় দু’জনের। মৃতরা বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী কি না তা এখনও জানা যায়নি। আর তারই মধ্যে চিত্রগ্রাহকের কাণ্ডে রীতিমতো নিন্দার ঝড় উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, গোটা ঘটনা ক্যামেরা বন্দি করার জন্য বিক্ষোভকারীদের পিছনে ছুটচেন বিজয়ও। পুলিশ তাঁকে সেখান থেকে সরে যেতে বললেও তিনি খানিক পরে ফের সামনে চলে আসেন। এরপরই যে বিক্ষোভকারীর গুলি লেগেছে, তাকে লাথি মারেন বিজয়। কিছু দিয়ে আঘাতও করেন। পুলিশের নির্দেশ অমান্য করেই এমনটা করেন বিজয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma) আগেই জানিয়েছেন, চর অঞ্চলগুলিকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে মুক্ত করার অভিযান চলবে। ব্রহ্মপুত্রের চর অঞ্চলে মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের বসবাস। এই অঞ্চলের কৃষিজীবীদের অনেককেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে অনেক সময়ই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা এখানে প্রবেশ করলেও বহু সময়ই পরিচয়ের বিভ্রান্তির জেরে রাজ্যের বাসিন্দা কৃষকদেরও পুলিশি জুলুম সইতে হয়।