টাকা তছরুপ থেকে ব্যাভিচার – রত্নার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন শোভন
ব্যবসার ‘টাকা তছরুপ’ থেকে ‘ব্যভিচার’, রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুললেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন সন্তানদেরও ‘কুশিক্ষা’ দিচ্ছেন তাদের মা রত্না।
দশমীর রাতে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঁথিতে শোভনের সিঁদুর দেওয়া নিয়ে মুখ খোলেন রত্না। বৈশাখীকে ‘রক্ষিতা’ বলে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। এ নিয়ে শোভন জানান, রত্নার বাবা বিধায়ক দুলাল দাসও তাঁকে ‘ব্যভিচারী’ বলেন। মুখ খোলেন শোভনের ছেলেও। বৈশাখী অবশ্য রত্না বা দুলালের অভিযোগের সরাসরি প্রতিক্রিয়া দিতে টাননি। তবে বান্ধবীর অপমান সহ্য করবেন না বলেই জানাচ্ছেন শোভন। স্ত্রী রত্না তাঁকে পিছন থেকে ছুরি মেরেছেন বলে অভিযোগ করেন শোভন। একই সঙ্গে বৈশাখীর বিশ্বাসযোগ্যতা, ভালবাসা দিয়ে তৈরি সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিতে তাঁর কোনও বিশেষ বন্ধনের প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন প্রাক্তন মেয়র। তাঁর কথায়,‘‘সাত পাকে বাঁধা পড়েও রত্না রক্ষিতা হয়ে গেছে। অথচ বৈশাখী সাত পাকে বাঁধা না পড়েও সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।’’ প্রশ্ন হল শোভন রত্নাকে কেন ‘রক্ষিতা’ বলে তোপ দাগছেন, শুধু কি বৈশাখীকে কটু কথা বলার জন্যই বেজায় চটেছেন শোভন? নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ।
শোভনের দাবি, একাধিক কারণেই তিনি রত্নার কাছ থেকে দূরে সরে এসেছেন। তাঁর অভিযোগ, স্ত্রী রত্না বেশ কয়েক বছর ধরেই অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন। তাঁর আরও দাবি, রত্না যে মোবাইল ফোন নম্বরটি ব্যবহার করতেন তা শোভনের কাগজপত্র ব্যবহার করে নেওয়া। তাই ওই ফোনের গত কয়েক বছরের যাবতীয় কল রেকর্ড তাঁর কাছে রয়েছে। সেখান থেকেই তিনি প্রমাণ পেয়েছেন রত্না গোপনে কলকাতার বাইরে যেতেন। ক্রেডিট কার্ডের বিস্তারিত তথ্য-সহ আরও অনেক কিছু সামনে আনবেন বলে দাবি শোভনের। তিনি বলেন,‘‘অন্য কাউকে দোষ দেওয়ার আগে রত্না যে ব্যভিচারী জীবনে লিপ্ত হয়েছেন, সেটা দেখা উচিত। সেই ব্যভিচারী জীবনের জন্য আমি নির্দিষ্ট করে আইনগত ভাবে ডিভোর্সের মামলা করেছি। বিভিন্ন সময়ে যে উনি মুম্বইয়ের বিভিন্ন হোটেলে গিয়েছেন, তার প্রমাণ আমার ডিভোর্স পিটিশনে দেওয়া আছে।’’ তাই বৈশাখীকে রক্ষিতা বলে স্বাভাবিক সম্পর্ককে বিকৃত করা হচ্ছে বলে মনে করেন শোভন। তাঁর কটাক্ষ,‘‘আমাকে অকর্মণ্য বলা হচ্ছে, আর তিনি যে কাজের পরপুরুষের সঙ্গে লুকিয়ে অন্য জায়গায় ঘুরে এলেন!’’
পাশাপাশি ছেলে সপ্তর্ষি এবং মেয়ে সুহানিকে মানুষের মতো মানুষ করে তোলার পরিবর্তে তাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন শোভন। তাঁর কথায়,‘‘সন্তানরা যে ভাষায় কথা বলছে তাতে তাদের মায়ের অশিক্ষার প্রতিফলন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।’’
শুধু জীবনযাপনই নয় ‘দাস এন্ড চ্যাটার্জি’ এবং ‘ডিআরএসএস’ সংস্থার টাকা তছরুপেরও অভিযোগ করেন শোভন। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘আমার যত জমি আছে তা ভাড়া খাটিয়ে ওরা রোজগার করেছে। গত চার পাঁচ বছরে যে কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছে তার হিসাব দিক আমাকে। আমি এটা নিয়েও মামলা করেছি, আমি আমার হিসাব ঠিক বুঝে নেব।’’
শোভনের আরও দাবি, দুলাল এবং রত্নারা কথায় কথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলছেন। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কী ভাবে চিনলেন ওঁরা, প্রশ্ন শোভনের।