রহস্যময় গাছকে কেন্দ্র করে মন্দির, শিব চতুর্দশীতে কয়েক হাজার পুণ্যার্থী পুজো দিতে আসেন কাকদ্বীপে

নামহীন গাছে লাল-হলুদ-গোলাপি ফুল বসন্তের দখিনা হাওয়ায় দুলছে।

February 26, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: নামহীন গাছে লাল-হলুদ-গোলাপি ফুল বসন্তের দখিনা হাওয়ায় দুলছে। ডালপালা জড়িয়ে ধরে রয়েছে মানতের লাল ডুরি(সুতো)। ভক্তরা অন্ধ বিশ্বাসে প্রাচীন এ গাছকে শিবজ্ঞানে পুজো করে। এখনও গোরু-ষাঁড়-ছাগল-ভেড়ার ‘আশ্চর্য আশ্রয়’ নামগোত্রহীন এ গাছ। আজও রহস্যময় হয়ে রয়ে গিয়েছে কাকদ্বীপের এই গাছদেবতা।

বাস্তবিকই গাছটির বয়সের কোনও গাছপাথর নেই। সুন্দরবনে কাকদ্বীপ তখন ম্যানগ্রোভের ঘন জঙ্গল। বহু দূরে লোকালয়। আচমকা হারিয়ে যেত গবাদি পশু। অনেক খোঁজার পর আবিষ্কার হতো, পালিয়ে এসে গাছটির নীচে আশ্রয় নিয়েছে গোরু-ভেড়া-ছাগল-ষাঁড়। জীবনবিজ্ঞানের বইয়ে মাংসখেকো ‘কার্নিভোরাস’ গাছের উল্লেখ আছে। তাদের কেউ শিকার আকর্ষণ করতে সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয় হাওয়ায়। কিন্তু কাকদ্বীপের গাছটি কার্নিভোরাস শ্রেণির নয়।

কি নাম সে গাছের? উত্তর শুনলে চোখ কপালে ওঠে। বৃক্ষটির কোনও নাম নেই। সেটি কোন শ্রেণির? কোনও গোত্রের? কিছুই জানে না কেউ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বছর দু’য়েক আগে কলকাতা থেকে তিন উদ্ভিদবিদ এসেছিলেন কাকদ্বীপে। তাঁরাও গাছটি চিনতে পারেননি। সে গাছে এই ফাল্গুনে শিব চতুর্দশীর পুজোর সময় লাল-হলুদ-গোলাপি এই তিন রঙের ফুল একসঙ্গে ফোটে। ছড়িয়ে থাকা অজস্র ডালপালা নকল কাণ্ডের মতো বেষ্টন করে আড়াল করে রেখেছে মূল কাণ্ডকে। ফলে এই নাম না জানা গাছের কাণ্ড বহু খুঁজেও কেউ আবিষ্কার করতে পারেনি, এত বছরেও।

গোরু-ষাঁড় ইত্যাদি পশুকে আকর্ষণ করত বলে গাছটি অচিরেই শিবের মর্যাদা পেতে শুরু করে। প্রায় ১৫০ বছর আগে ঘন জঙ্গলে গাছের আশ্রয়ে তৈরি হয় মন্দির। তা এখন কাকদ্বীপের আটেশ্বর মন্দির নামে প্রবল জনপ্রিয়। বৃক্ষটির কারণেই এলাকাটির নাম ঝাঁকড়াতলা। বর্তমানে এখানে স্থায়ী মন্দির। এখনও নিয়মিত পুজো হয়। শিব চতুর্দশী তিথিতে কয়েক হাজার পুণ্যার্থী পুজো দিতে আসেন। ভিন জেলা থেকেও আসেন বহু ভক্ত। সবার বিশ্বাস, আটেশ্বর দেবতা খুব জাগ্রত। মন্দির কমিটির সভাপতি প্রবীরকুমার মাইতি বলেন, ‘গতবছর দশ হাজারেরও বেশি ভক্ত জল ঢালতে এসেছিলেন। ১৫০ ভক্ত মানত রেখেছিলেন। এবছর ভক্ত সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নিরাপত্তার জন্য পুলিসি প্রহরার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen