আধার ও ভোটার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, SIR মামলায় সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যে বিতর্ক
কোন নথি দিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:৩০: আপনি কি ভারতের নাগরিক? প্রমাণ হিসেবে আধার কার্ড বা ভোটার আইডি যথেষ্ট নয়। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এগুলি নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণ নয়। অন্যান্য নথির সঙ্গে মিলিয়ে তা যাচাই করতে হবে।
বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ পুনর্বিবেচনা (SIR) ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) অবস্থানকে কার্যত সমর্থন করেছে আদালত। বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানায়, বিশ্বাসের অভাব থেকেই বিরোধ তৈরি হয়েছে। ভোটার তালিকায় নাম যোগ বা বাদ দেওয়ার ক্ষমতা কমিশনের হাতে।
বম্বে হাইকোর্টও একই মত দিয়েছে এক পৃথক মামলায়। অনুপ্রবেশকারী এক বাংলাদেশির জামিন খারিজের সময় বিচারপতি অমিত বোরকার পর্যবেক্ষণ করেন, আধার, প্যান বা ভোটার কার্ড কেবল পরিচয়পত্র। নাগরিকত্ব নির্ধারণ করবে ১৯৫৫ সালের সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট।
এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কোন নথি দিয়ে নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। এসআইআরের জন্য নির্ধারিত ১১টি নথি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, এতদিন এই নথিগুলি প্রমাণ হিসেবে ধরা হতো। আদালত ভিন্ন কিছু বললে তা মানতে হবে। সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন, যদি আধার গ্রহণযোগ্য না হয়, তবে সরকারের কোটি টাকা খরচের যুক্তি কোথায়?
বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে একাধিক আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। কমিশনের দাবি, ৭.৯ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭.২৪ কোটি এসআইআরে সাড়া দিয়েছে। তাই এক কোটি ভোটারের নাম বাদ পড়ার অভিযোগ ঠিক নয়।
আবেদনকারীদের পক্ষে কপিল সিবাল বলেন, জন্মসনদসহ প্রয়োজনীয় নথি জোগাড়ে অসুবিধা হচ্ছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত মন্তব্য করেন, বিহারে কারও নথি নেই, এমন দাবি দায়িত্বজ্ঞানহীন।
অভিষেক সিংভি, প্রশান্ত ভূষণ ও যোগেন্দ্র যাদব প্রক্রিয়ার নানা ত্রুটি তুলে ধরেন। মৃত ঘোষিত ভোটারদের জীবিত প্রমাণও আদালতে পেশ করা হয়। কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী স্বীকার করেন, খসড়া তালিকায় কিছু ভুল থাকতে পারে।
আজ, বুধবার মামলার শুনানি ফের শুরু হবে। আদালত সতর্ক করেছে, বেআইনি কিছু প্রমাণ হলে এসআইআর বাতিল হতে পারে, এমনকি সেপ্টেম্বরের শেষেও।