দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে আক্রমণ ABVP-র: বধ্যভূমিতে পরিণত হচ্ছে DU?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১২.৩০: গত ১৬ই অক্টোবর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভীমরাও আম্বেদকর কলেজে (Bhimrao Ambedkar College – DU) অধ্যাপক সুজিত কুমার ও আরও কয়েকজন শিক্ষকের ওপর চড়াও হয় আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপির (ABVP) সদস্যরা। অভিযোগ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের যুগ্ম সম্পাদক ও এবিভিপি নেত্রী দীপিকা ঝা (Deepika Jha) স্বয়ং এক অধ্যাপককে চড় মেরেছেন। তবুও এক সপ্তাহের বেশি কেটে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে এখনো পর্যন্ত কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই ঘটনার পর থেকে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক সংগঠন, ডেমোক্র্যাটিক টিচার্স ফ্রন্ট, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল টিচার্স কংগ্রেস, ডেমোক্র্যাটিক টিচার্স ইনিশিয়েটিভ, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা মোর্চা ও সমাজবাদী শিক্ষকমঞ্চ, প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে সাধারণ সভা (General Body Meeting) আহ্বানের দাবি জানিয়েছে, যাতে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়।
শিক্ষকদের বক্তব্য, এবিভিপি ও বিজেপির প্রশ্রয়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় আজ এক আইনশৃঙ্খলাহীন বধ্যভূমিতে পরিণত হচ্ছে, যেখানে দলের নির্দেশ না মানলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর নেমে আসে আঘাত, অপমান ও শারীরিক নির্যাতন। তারা বলছেন, “শিক্ষকদের ওপর সহিংসতা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং ঘটনার পর ছাত্র সংসদের সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে আক্রান্ত শিক্ষকের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আপাতত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যারা দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হবে কিনা, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা নেই।
শিক্ষক সমাজের দাবি, অবিলম্বে কঠোর প্রশাসনিক ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। তাদের মতে, বিজেপি ও এবিভিপির দাদাগিরি আজ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মতের অমিল হলেই যে কোনও মুহূর্তে আক্রান্ত হতে পারেন শিক্ষক বা ছাত্র। তাঁরা সতর্ক করেছেন, যদি এই প্রবণতা বন্ধ না হয়, তবে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় আর শিক্ষার কেন্দ্র নয়, বরং রাজনৈতিক সন্ত্রাসের প্রাঙ্গণ হয়ে উঠবে।