ডানার ঝাপটায় বিশেষ কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ‘রেকর্ড বৃষ্টি’তে ভাসল কলকাতা

শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে গাড়ি এবং মেশিন বসিয়ে জল বের করার কাজ করেন পুরকর্মীরা।

October 26, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ডানার ঝাপটায় বিশেষ কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও ‘রেকর্ড বৃষ্টি’তে ভাসল কলকাতা। ছবি সৌজন্যে: দেবাশীষ ভাদুড়ী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ডানাকে ঘিরেও সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল প্রশাসন। তবে সেই অর্থে ঘূর্ণিঝড় ডানার ঝাপটা বিশেষ কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি শহর কলকাতার। তবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়। শনিবারও বৃষ্টি অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার পর শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। যার জেরে কলকাতার বিভিন্ন অংশ জলমগ্ন। এমনকি জল ঢোকে এসএসকেএম, চিত্তরঞ্জন মেডিকেল কলেজের মতো একাধিক হাসপাতালের ভিতরও। বেলা দু’টো পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। এবং জল নামতে নামতে বিকেল গড়িয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ জমা জলে থাকার কারণে রাস্তায় বেরিয়ে ভুগতে হয়েছে মানুষকে। দুপুরের পর বৃষ্টি কমলেও বিকেলের পর থেকে রাত পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফের ভারী বৃষ্টি। ফলে রাতের দিকেও বহু রাস্তায় জমে জল।

উত্তর ও মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, মহাত্মা গান্ধী রোড এবং সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের সামনের অংশ, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট, স্ট্র্যান্ড রোড, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট এবং রাজা রামমোহন রায় সরণিতে জল জমে যায়। দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো, গার্ডেনরিচ, হরিশ মুখার্জি রোড, হেস্টিংস, এলিয়ট রোড, ঢাকুরিয়া, বালিগঞ্জ, এক্সাইড, পার্ক সার্কাস, নিউ আলিপুর, তারাতলা, গড়িয়া, যোধপুর পার্ক, লেক গার্ডেন্স, যাদবপুর সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকে। পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, এদিন ভোর পাঁচটা থেকে দুপুর দু’টো পর্যন্ত সবথেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয় যোধপুর পার্ক পাম্পিং স্টেশন জোনে। পরিমাপ ১৬৩ মিমি। তারপরই বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশনে ১২৪ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে গাড়ি এবং মেশিন বসিয়ে জল বের করার কাজ করেন পুরকর্মীরা। সন্ধ্যার দিকে বাইপাস, ভিক্টোরিয়া, ময়দান চত্বর সহ কয়েকটি এলাকায় জল জমে। বৃহস্পতিবার রাতভর পুরসভার কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শুক্রবার সকালেও কন্ট্রোল রুমে আসেন তিনি। মেয়র বলেন, ‘সকাল থেকে প্রায় ১০০ মিমিরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় জল নামতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগবে। এসএসকেএম হাসপাতালে কিছুটা জল জমেছিল। সেটা বের করা হয়েছে। নিচু এলাকায় জল জমেছে। দিনরাত এক করে কর্মীরা কাজ করেছেন।’ তিনি জানান, ঠনঠনিয়ায় পাম্পিং স্টেশন রয়েছে। ঋষিকেশ পার্কে আরও একটি করা হচ্ছে। যেটির নাম নেতাজি পাম্পিং স্টেশন। বর্ষার আগে বাতিস্তম্ভগুলি পরীক্ষা করে দেখা হয়।

শুক্রবার ভোর ৪টে থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত শহরের কোথায় কত পরিমাণ বৃষ্টি হল, একনজরে রইল সেই তালিকা।

মানিকতলা ৮৩ মিলিমিটার, বীরপাড়া ৭০ মিলিমিটার, বেলগাছিয়া ৬৯ মিলিমিটার, ধাপা লক ৭১ মিলিমিটার, তপসিয়া ১০৯ মিলিমিটার, উল্টোডাঙা ৬৯ মিলিমিটার, পালমার ব্রিজ ৯৪ মিলিমিটার, ঠনঠনিয়া ৭৯.৮০ মিলিমিটার, মোমিনপুর ১১১ মিলিমিটার, চেতলা লক ১০৭ মিলিমিটার, যোধপুর পার্ক ১৬৩ মিলিমিটার, কালীঘাট- ১০৫.৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
একইভাবে গড়িয়া ১২৪ মিলিমিটার, সি.পি.টি ক্যানেল ১১০.৪০ মিলিমিটার, দত্তা বাগান ৭৩.৫০ মিলিমিটার, জিনজিরা বাজার ৯৭ মিলিমিটার , বেহালা ফ্লাইং ক্লাব- ৯৬.৩০ মিলিমিটার, কুলিয়া টেংরা- ৭৮.২০ মিলিমিটার, পাগলাডাঙ্গা ৮৪.৬০ মিলিমিটার, চিংড়িঘাটা ৬৯.০০ মিলিমিটার, মার্কাস স্কোয়ার ৫৮.৭০ মিলিমিটার, পাটুলি ১২৯ মিলিমিটার, ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ড ১০৩.৫০ মিলিমিটার, খানখেতি খাল ১০৯ মিলিমিটার এবং জোকায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen