ইউক্রেনে আমেরিকার টমাহক মিসাইল! কিউবা বিপর্যয়ের ছায়া কি ঘনিয়ে আসছে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:৩০: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও ফল শূন্য। সম্প্রতি রুশ ও ইউক্রেনীয় রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) আলোচনার পরেও শান্তি ফেরেনি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এবার ইউক্রেনের হাতে টমাহক মিসাইল (Tomahawk Missiles) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা (USA)। এই পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এর ফলে রাশিয়া (Russia) ও আমেরিকার (America) মধ্যে পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে এবং বিশ্ব আবার কিউবা বিপর্যয়ের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে।
আমেরিকার তৈরি ২,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার টমাহক মিসাইল জাহাজ বা সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়। এই ক্ষেপণাস্ত্রের বিশেষত্ব হলো, এটি খুব বেশি উচ্চতায় ওড়ে না বলে রাডারে সহজে ধরা পড়ে না। এটি সাধারণ এবং পারমাণবিক উভয় ধরনের মিসাইল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিটি মিসাইলের ওজন প্রায় ১.৫ টন এবং এটি একসঙ্গে ৪৫৪ কেজি বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইউক্রেনের (Ukraine) হাতে এই মিসাইল তুলে দিলে ১৯৬২ সালের কিউবা বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এই বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এর ফলস্বরূপ সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে পারেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প অবশ্য জানিয়েছেন, আমেরিকা সরাসরি ইউক্রেনকে এই মিসাইল বিক্রি করবে না, বরং ন্যাটোর মাধ্যমে এটি ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
১৯৬২ সালে কিউবায় সোভিয়েত ইউনিয়নের পারমাণবিক অস্ত্র মজুত করার ঘটনা উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কিউবার চারপাশে নৌসেনা মোতায়েন করেন, যা যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করে। শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবা থেকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রত্যাহার করে নিলে যুদ্ধ রোধ করা সম্ভব হয়। সেই ঘটনা ‘কিউবান মিসাইল ক্রাইসিস’ (Cuban Missile Crisis) নামে পরিচিত।
বর্তমানে ইউক্রেনে টমাহক মিসাইল পাঠানোর সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে আবারও উত্তেজনা বাড়ছে। ফলে কিউবার মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।