BSNL কর্মীরা দেশদ্রোহী, ওদের তাড়িয়ে বেসরকারিকরণ করা হবে: বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে

বিএসএনএল-এর কর্মীদেরই এবার দেশদ্রোহী বলে আখ্যা দিলেন নরেন্দ্র মোদীর দলের সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে।

August 12, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

শুরু হয়েছিল গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে। চরম দুঃসময়ের মধ্যে চলা বিএসএনএলের কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছাবসর ঘোষণার সেই প্রকল্প শুরুর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় ২২ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। আর সেই সময়ের একমাস বােদ ৩ ডিসেম্বর, ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের কর্মীদের জন্য স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প শেষ হওয়ার সময় ৭৮৫৬৯ জন কর্মী আবেদন জমা করলেন স্বেচ্ছাবসরের। কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই বিলগ্নিকরণের পথে পা বাড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিভিন্ন সরকারি সংস্থা বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে তাঁরা। বাদ নেই BSNL-ও। কিন্তু সেই বিএসএনএল-এর কর্মীদেরই এবার দেশদ্রোহী বলে আখ্যা দিলেন নরেন্দ্র মোদীর দলের সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে।

সমস্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও BSNL-এর ৮৮ হাজারের বেশি কর্মী দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন বলে অভিযোগ তুলে হেগড়ে দাবি করেন, ওই কর্মীদের তাড়িয়ে দিয়ে বিএসএনএল-কে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে। একজন বিজেপি সাংসদের এহেন দাবিতে ফের শোরগোল পড়েছে দেশজুড়ে।

সোমবার কর্নাটকে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএনএল-এর কর্মীদের সব সুবিধা দিচ্ছে। এমনকী বাজারও তৈরি করে দিচ্ছে। কিন্তু সমস্ত সুযোগ সুবিধা নিয়েও ওই কর্মীরা দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। ওরা দেশদ্রোহী। ওই ৮৮ হাজার কর্মীকে তাড়িয়ে দিয়ে বিএসএনএল-কে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে!’

বিজেপি সাংসদের বক্তব্যের ভিডিয়ো সামনে আসতেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। কেন্দ্রের নীতিই বিজেপি সাংসদ প্রকাশ্যে আবার বলে দিলেন, এই অভিযোগ তুলে আক্রমণ শানিয়েছেন তাঁরা। এর আগেও অবশ্য নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রচারে এসেছিলেন অনন্তকুমার হেগড়ে। গত বছরই তিনি বলেছিলেন, ‘যে হাত কোনও হিন্দু মেয়েকে স্পর্শ করে, তাকে রাখার দরকার নেই।’ তারও আগে ২০১৭ সালে বলেছিলেন, ‘সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটি মুছে দিতেই কেন্দ্রে আসীন হয়েছে বিজেপি সরকার।’ তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘গর্বের সঙ্গে বলুন আপনি মুসলিম, খ্রিস্টান, লিঙ্গায়েত, ব্রাহ্মণ, না কি একজন হিন্দু। উত্তরাধিকার সম্পর্কে অজ্ঞরাই নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেন, তাঁদের নিজস্ব কোনও পরিচয় নেই। তাঁরা বুদ্ধিমান হতে পারেন, কিন্তু নিজের বাবা-মা সম্পর্কেই কিছু জানেন না।’

বুদ্ধিজীবীদের আক্রমণ শানাতে গিয়েও তিনি বলেছিলেন, ‘অন্তরাত্মা কী তা বোঝেন না বুদ্ধিজীবীরা। তাঁদের কাছে জীবন্ত মানুষ ও মৃতদেহের মধ্যে কোনও তফাত নেই। কারণ উভয়ের ক্ষেত্রেই শরীরের অংশগুলি এক। মানবশরীরের চাহিদাগুলি পূর্ণ করাটাই জীবন বলে মনে করেন তাঁরা।’ এমনকী মহাত্মা গান্ধীর স্বাধীনতা আন্দোলনকেও ‘ড্রামা’ বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন এই সাংসদ। এবার বিএসএনএল কর্মীদের দেশদ্রোহী বলেও আক্রমণ করলেন তিনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen