বাঙালি হেনস্থা: বাংলাদেশে Pushback মালদহের যুবকে, আদালতের দ্বারস্থ অসহায় পিতা
বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে। উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে প্রতিদিন বাংলাভাষীদের উপর নির্যাতনের খবর মিলেছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:৪৫: বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে। উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা থেকে প্রতিদিন বাংলাভাষীদের উপর নির্যাতনের খবর মিলেছে। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠছে, রাজস্থানে কর্মরত মালদহের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিককে বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, মালদহের কালিয়াচক থেকে রাজস্থানে কাজ করতে গিয়েছিলেন আমির শেখ। অভিযোগ, বাংলাদেশের নাগরিক সন্দেহে তাঁকে আটক করে সাতক্ষীরায় ‘Pushback’ করা হয়েছে। আমিরের বাবা জিয়েম শেখ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে ওড়িশার এক পারিযায়ী শ্রমিক নিখোঁজের মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ ৪ সপ্তাহের মধ্যে ওড়িশা সরকারকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। আগামী ২৮ আগস্ট সেই মামলার শুনানি হবে।
উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হলেন শীতলকুচির এক শ্রমিক। আক্রান্ত মমিন মিয়ার বাড়ি শীতলকুচি ব্লকের নগর লালবাজার গ্রামে। অভিযোগ, গত রবিবার গাজিয়াবাদে কাজে যাওয়ার পথে তাঁদের গাড়ি আটকায় পুলিশ। তাঁরা বাঙালি কি না জানতে চাওয়া হয়। উত্তর দিতেই মমিনকে নিজেদের গাড়িতে তুলে নেয় পুলিশ। কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল। থানার বদলে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। টাকা ও সমস্ত নথি কেড়ে নিয়ে মমিনকে রাস্তায় ছেড়ে চলে যায় পুলিশ। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে। বুধবার স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে ফেরে মমিন। তাঁকে শীতলকুচি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মমিন। তাঁর স্ত্রী লিপি বিবির কথায়, বাঙালি বলেই তাঁর স্বামীকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে।
হরিয়ানায় বাংলাদেশি সন্দেহে বনগাঁর গোপালনগরের এক বৃদ্ধ সাধন দাসকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রাণে বাঁচতে রক্তাক্ত বাবাকে নিয়ে কার্যত পালিয়ে গোপালনগরের বাড়িতে ফিরেছেন সাধনবাবুর ছেলে সৌভিক। গোপালনগরের দিঘারি পঞ্চায়েতের কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা সাধন দাস। পরিবার নিয়ে হরিয়ানার গুরুগ্রামে থাকতেন তিনি। বাবা ও ছেলে একটি হোটেলে হাউস কিপিংয়ের কাজ করতেন। গুরুগ্রামে বাঙালি পট্টিতেই ঘর ভাড়া নিয়ে তাঁরা থাকতেন। সৌভিক বলেন, তাঁকে ধরতে পরপর তিনদিন পুলিশ গিয়েছিল। স্ত্রীকে ঘরে রেখে, বাইরে থেকে তালা দিয়ে তিনদিন পালিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। কাজে যাওয়ার পথে তাঁর বাবাকে আটকায় পুলিশ। ভারতীয় নাগরিকত্বের যাবতীয় নথি থাকা সত্ত্বেও, বাংলায় কথা বলায় নির্যাতন করার অভিযোগ আনছেন তিনি।