২৬শের মহারণে SIR: BJP-র প্রশাসনিক বাহিনী বনাম TMC-র সাংগঠনিক শক্তি, এগিয়ে কে?

October 17, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ২০:২০:  ২০২৬ শের বিধানসভা নির্বাচনের আগে SIR নিয়ে জমে উঠেছে লড়াই। ভোটার তালিকা পর্যালোচনার নতুন প্রক্রিয়া এসআইআর (Special Intensive Revision) নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল বনাম বিজেপির হুঁশিয়ারি পাল্টা হুঁশিয়ারিতে সরগরম বাংলা।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরাসরি অভিযোগ করেছেন, বাংলায় এসআইআর-এর (SIR) নামে এনআরসি (NRC) করার চক্রান্ত চলছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে এই ষড়যন্ত্র রুখবেন। অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick) বনগাঁর বিজয়া সম্মিলনীতে বলেন, এসআইআরে যদি এক জন বৈধ ভোটারের (Valid voter) নাম বাদ যায়, তাহলে পাড়ার বিজেপি নেতাদের আটকে রাখা হবে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সুদীপ রাহা (Sudip Raha) পূর্ব মেদিনীপুরে ঘোষণা করেছেন, এক জন বাংলার মানুষের নাম বাদ গেলেও এক লক্ষ কর্মী নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি ঘেরাও করা হবে।

বিজেপির তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) সংখ্যালঘু মুসলিমদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বা হামলার ঘটনা ঘটে, তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালাবে। তাঁর দাবি, তৃণমূল (TMC) নেতারা এসি ঘরে বসে থাকবেন, কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রাণ যাবে। তাই তৃণমূলের ফাঁদে পা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

এসআইআর (SIR) নিয়ে এই রাজনৈতিক লড়াইয়ের পেছনে নানা কারণ। বিজেপি চাইছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া কার্যকর করতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) মমতার হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব না দিয়ে বলেন, বিহারে (Bihar) এসআইআরের সময়েও এমন অনেক কিছু বলা হয়েছিল। সেখানে এসআইআর হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গেও (West Bengal) হবে।

তৃণমূলের পাল্টা কৌশল সাংগঠনিক শক্তিকে কাজে লাগানো। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (AbhiShek Banerjee) সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বিশেষ বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে সংগঠনকে মাঠে নামাতে হবে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকা এবার গুরুত্বপূর্ণ, যাদের উপর তৃণমূলের প্রভাব বেশি। অতীতে বাম আমলে শিক্ষক সংগঠন নির্বাচনী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তৃণমূল মনে করছে, এবারও সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিরোধ সম্ভব।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এসআইআর নিয়ে প্রকাশ্যে নেতারা যা বলছেন, তা মূলত কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করার জন্য। বিহারে ৪৭ লক্ষ নাম বাদ দেওয়া সম্ভব হয়েছিল, কারণ প্রশাসন ছিল বিজেপি (BJP) ও জেডিইউ-এর (JDU) নিয়ন্ত্রণে। বাংলায় সেই পরিস্থিতি নেই। তৃণমূলের (TMC) মতে, আমলাতন্ত্রকে ব্যবহার করে গণহারে নাম বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও বিজেপির পাল্টা যুক্তি, কমিশন এবার কঠোর, চার আধিকারিককে সাসপেন্ড করে তা প্রমাণও দিয়েছে।

২০২১ ও ২০২৪-এর নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবারও ফের মুখোমুখি হতে চলেছে প্রশাসনিক বাহিনী বনাম সাংগঠনিক বাহিনী। আগের দু’বারের মতো এবারও কি তৃণমূল সেই লড়াইয়ে জয়ী হবে? নাকি বিজেপি তাদের কৌশল ও কেন্দ্রীয় শক্তিকে কাজে লাগিয়ে পাল্টা ঘুঁটি সাজাবে? সব মিলিয়ে, এসআইআর (SIR) ঘিরে শুরু হয়ে গেছে ২৬শের মহারণের প্রস্তুতি। এখন গোটা রাজ্যজুড়ে একটাই প্রশ্ন, বঙ্গের বিধানসভা ভোটের লড়াইয়ে শেষ হাসি কে হাসবে? তৃণমূল, না কি বিজেপি?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen