টিকা, ওষুধ ও অক্সিজেন থেকে কেন্দ্রের যায় ৬ হাজার কোটি, নিন্দা অমিতের

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নিমর্লা সীতারামনকে বুধবার চিঠি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কেন্দ্রের হিসেব মতোই ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জিএসটি আদায়ে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা কম পড়তে চলেছে।

May 13, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের টিকা কর্মসূচির নামে ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি জিএসটির লাভ ঘরে তুলছে কেন্দ্র। বুধবার এই মর্মে সরব হল কংগ্রেস। ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার থেকে রাজ্য সরকার এবং প্রাইভেট হাসপাতালগুলি যে সরাসরি ডোজ কিনছে, সেখান থেকেই কেন্দ্র এই লাভের গুড় খাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সোনিয়া গান্ধীর দল। স্রেফ ভ্যাকসিনের ওপর ৫ শতাংশ জিএসটি চাপিয়ে ৩ হাজার ১৮ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকাই নয়, ওষুধ, অক্সিজেন, (Oxygen) স্যানিটাইজারের মতো সামগ্রীতেও ১২ থেকে ১৮ শতাংশ জিএসটি চাপিয়েও মোদি সরকার বিপুল আয় করেছে। সব মিলিয়ে মোট ৬ হাজার কোটি টাকা জিএসটি (GST) আদায় হয়েছে বলেই জানিয়েছেন এআইসিসি মুখপাত্র অর্থনীতিবিদ গৌরব বল্লভ। বলেছেন, বিপর্যয়েও লাভের সুযোগ খুঁজছেন নরেন্দ্র মোদি। বাজেটে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেও ভ্যাকসিন দেওয়ার দায়িত্ব নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলেছে কেন্দ্র। এখন রাজ্য সরকার নিজের পয়সায় যে ভ্যাকসিন কিনছে সেখান থেকেও জিএসটি আদায় করছে। দেশে যখন ভ্যাকসিনের টানাটানি, কেন বিদেশে সাড়ে ৬ কোটি ডোজ পাঠানো হল? সোচ্চার হয়েছে কংগ্রেস। ভ্যাকসিনের (Vaccine) টানাটানিতে রাজধানী দিল্লিতে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের টিকা কর্মসূচি প্রায় বন্ধের মুখে। মোদি সরকারের পরিকল্পনার অভাবেই মানুষকে ভুগতে হচ্ছে বলেও তোপ দেগেছে দিল্লি সরকার।

ওদিকে, করোনা সামাল দিতে লেজেগোবরে মোদি সরকার নিজেদের অস্বস্তি কাটাতে এবার ইতিবাচক প্রচারের মাধ্যমে আম আদমির দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে। যদিও চোখে আঙুল দিয়ে সত্য সামনে আনতে পাল্টা সক্রিয় বিরোধীরাও। সরকারের পক্ষ থেকে সচিব পর্যায়ের এক বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দেশবিদেশে ভারতের যে বদনাম হচ্ছে, তার পাল্টা প্রচার করতে হবে। তুলে ধরতে হবে ইতিবাচক উদ্যোগ। সেই মতো পিএম কেয়ার্সের পয়সায় অক্সিজেন সরবরাহ থেকে শুরু করে কত অল্পদিনে ভারত কত বেশি লোককে ফ্রি ভ্যাকসিন দিচ্ছে, তার পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হচ্ছে। এমনকী ভোল বদলানো ভাইরাসের সঙ্গে ভারতের নাম যুক্ত হতেই ফোঁস করে উঠেছে মোদি সরকার। সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অফিসাররা অনায়াসে ইউকে ভেরিয়েন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ভেরিয়েন্টের তকমা দিচ্ছেন। অথচ করোনা ভাইরাসের একটি ভেরিয়েন্টের (B.1.617) সঙ্গে ভারতের নাম জড়াতেই বিবৃতি জারি করে বুধবার প্রতিবাদ করেছে কেন্দ্র।

কিন্তু এভাবে বালিতে মাথা গুঁজলেই কি বাস্তব বদলে যাবে? তোপ দেগেছেন রাহুল গান্ধী। ট্যুইটারে সরব হয়েছেন ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরও। প্রতিনিয়ত দেশে যখন দুর্দশা আর বেদনার খবর সামনে আসছে, তখন ইতিবাচক প্রচারের নামে মিথ্যে প্রোপাগান্ডা শুরু হয়েছে। ইতিবাচক হতে গিয়ে তো আর সরকারের অন্ধ প্রচারক হতে পারি না। মন্তব্য করেছেন তিনি।

করোনা কালে রাজ্যগুলির আর্থিক ক্ষতি বাড়লেও মোদি সরকার মুখে কুলুপ দেওয়ায় দপ্তরের দায়িত্ব নিয়েই সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নিমর্লা সীতারামনকে বুধবার চিঠি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কেন্দ্রের হিসেব মতোই ২০২১-২২ অর্থবর্ষে জিএসটি আদায়ে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা কম পড়তে চলেছে। এরপর যুক্ত হবে করোনার কুপ্রভাব। ফলে রাজ্যের ক্ষতি আরও বাড়বে। তাই অবিলম্বে অনলাইন জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক ডাকুন। সংবিধান মোতাবেক প্রতি চার মাস অন্তর যেখানে কাউন্সিলের বৈঠক ডাকার কথা, সেখানে কেন তা লঙ্ঘন হচ্ছে? অক্টোবর মাসের পর কেন জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে আর্থিক পরিস্থিতি আলোচনা হল না? নির্মলার কাছে জবাব চেয়েছেন অমিত মিত্র (Amit Mitra)।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen