কলকাতায় বেড়েই চলেছে শব্দ-রাক্ষসের তাণ্ডব, পরিত্রাণ চায় নগরবাসী

বায়ু ও জলে ক্রমবর্ধমান দূষণ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে চলেছেন।

April 4, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বায়ু ও জলে ক্রমবর্ধমান দূষণ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে চলেছেন। এর পাশাপাশি শব্দদূষণও যে বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে, তা উঠে এল রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক রিপোর্টে। সারা বিশ্বের বেশ কিছু শহরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, কলকাতা সহ ভারতের পাঁচটি শহরে শব্দমাত্রা সহনসীমা ছাড়িয়ে অনেকটাই বেশি রয়েছে। গত মাসেই ‘অ্যানুয়াল ফ্রন্টিয়ার রিপোর্ট-২০২২’ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ দপ্তর। সেখানে বিশ্বের মোট ৬১টি শহরের শব্দমাত্রার তুলনামূলক চিত্র রয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ (১১৪ ডেসিবেল) দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ কবলিত। যা বিশ্বে দ্বিতীয়। এই তালিকায় সবার আগে রয়েছে বাংলাদেশের ঢাকা (১১৯ ডেসিবেল)। পাকিস্তানের ইসলামাবাদ (১০৫ ডেসিবেল), করাচী, বাংলাদেশের রাজশাহী ইত্যাদি শহরও শব্দদূষণের তীব্রতায় সামনের দিকেই রয়েছে। মোরাদাবাদ ছাড়াও দেশের আরও চারটি শহরের শব্দমাত্রা উদ্বেগজনক বলে জানাচ্ছে ওই রিপোর্ট। সেগুলি হল দিল্লি (৮৩ ডেসিবেল), জয়পুর (৮৪ ডেসিবেল), কলকাতা ও আসানসোল (৮৯ ডেসিবেল)।

১৯৯৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করে দেওয়া মাপকাঠি অনুযায়ী, রাস্তাঘাট ও দোকানপাট, শিল্পাঞ্চলে শব্দের সর্বোচ্চ সহনসীমা ৭০ ডেসিবেল। আর জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই সীমা ৫৫ ডেসিবেল। দেখা যাচ্ছ, কলকাতা ও আসানসোল শব্দমাত্রা সেই সর্বোচ্চ সীমা অনেকটাই ছাড়িয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেকেই বিষয়টির গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত না হলেও সারাক্ষণ প্রচণ্ড শব্দ ও কোলাহলে কান ঝালাপালা এবং এর জেরে নানা সমস্যার কথা স্বীকার করছেন। শব্দদূষণ নিয়ে সারা বছরই সতর্ক থাকার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ দপ্তরের অধিকর্তা ইঙ্গার অ্যান্ডারসন বলেন, সামনের দিনে শব্দদূষণ অন্যতম বিপদ হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে। এই দূষণ মানুষের বেঁচে থাকা, কাজকর্ম সবেতেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পাশাপশি সমস্যায় পড়ছে বৃহত্তর প্রাণিজগত।

কলকাতা ও আসানসোলের সর্বোচ্চ শব্দমাত্রা একটি অশনি সঙ্কেত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশ বিজ্ঞানী ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডঃ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, কলকাতা, আসানসোলের মতো শহরে প্রতিদিন গাড়ি, বাইক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। দেদার হর্ন ব্যবহার করছে তারা। রাস্তায় যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যদি স্পিডোমিটার লাগানো যায়, শব্দের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে রাখার জন্যও সেরকম ব্যবস্থা করা সম্ভব। পিজি হাসপাতালে ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ অরিন্দম দাস বলেন, আমরা সাধারণত মনে করি, ৮০ ডেসিবেল বা তারও বেশি মাত্রার শব্দের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ থাকলে তা কানের ক্ষতি করে। কলকাতা ও আসানসোলের শব্দমাত্রা যেখানে পৌঁছেছে, তাতে এখন থেকেই সচেতন হওয়া ভালো।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen