বৃষ্টিতে ভিজবেন না, সাবধানে থাকুন: টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপ উদ্বোধনে জনতার উদ্দেশে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:০০: শরৎকালেও অব্যাহত বৃষ্টি। তার মধ্যেই শনিবার থেকে কলকাতার একাধিক পুজোমণ্ডপের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতিবাগান সর্বজনীন, টালা প্রত্যয়, শ্রীভুমি স্পোর্টিং ক্লাব-সহ বিভিন্ন মণ্ডপের দ্বারোদ্ঘাটন করেন তিনি।
টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আমার শরীরটা খারাপ, গলাটা একটু ফুলে গিয়েছে, ব্যথা। এই আবহাওয়ায় সকলেরই কমবেশি এমন শরীর খারাপ হচ্ছে। এখন খুব ইনফ্লুয়েঞ্জা হচ্ছে। খুব সাবধানে থাকুন সকলে। সামনে পুজো। অনেক মণ্ডপ উদ্বোধন আছে।”
আমজনতার উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ”যখন তখন বৃষ্টি হচ্ছে এখন। আপনারা সকলে ছাতা সঙ্গে নিয়ে বেরোবেন। এই বৃষ্টিতে ভিজলে কিন্তু শরীর খারাপ হবে, পুজোয় আনন্দ করতে পারবেন না। আমরা প্রার্থনা করি, পুজোর ক’টা দিন সকলে যেন ভালোভাবে কাটাতে পারে। মা যেন পুজোর দু’দিন আগে থেকে আবহাওয়া ভালো করে দেন, সবাই যেন কাজ শেষ করতে পারেন।”
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, পুজোর চার-পাঁচ দিন জুড়েই বৃষ্টি হবে, এরপর তা আরও বাড়তে পারে। সেই পূর্বাভাসের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ”বর্ষা এবার অনেক আগে এসেছে। আর যাওয়ারই নাম করছে না। এই বৃষ্টি, বাজ পড়া – এসবের কারণে পুজো উদ্যোক্তারা খুব চিন্তিত। তবে তাঁদের কৃতিত্ব যে এত দুর্যোগের মধ্যেও দ্রুত মণ্ডপের কাজ শেষ করছেন। কারণ, এখন তো ষষ্ঠীর মধ্যে পুরস্কার ঘোষণা হয়ে যায়। তাই তাঁদের কাজ শেষ করতেই হবে।”
ডিভিসির জলছাড়া নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। পাশাপাশি পুজোর মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর আশাবাদী বার্তা, “আগামিকাল মহালয়ার তর্পণের মধ্যে দিয়ে সবরকম বর্ষণ, গর্জন, তর্জনের বিরুদ্ধে মা আলোকের বার্তা নিয়ে আসবেন।”
দুর্গাপুজোকে ঘিরে বাংলার আবেগ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কথা তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, দুর্গাপুজো শুধু উৎসব নয়, এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব, গর্বের উৎসব। UNESCO-র স্বীকৃতি এই উৎসবকে আন্তর্জাতিক সম্মান এনে দিয়েছে।
হাতিবাগান সর্বজনীন, টালা প্রত্যয় ও শ্রীভূমির দুর্গাপূজা মণ্ডপ উদ্বোধন করে তিনি শিল্পী, কারিগর ও সংগঠকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলার সৃজনশীল ঐতিহ্য নতুন করে প্রাণ পেয়েছে বলে জানান তিনি।
বর্তমান সংকটের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী আশাবাদী ভঙ্গিতে বলেন, “যদিও কালো মেঘ আমাদের আকাশে ছায়া ফেলেছে, আমার দৃঢ় বিশ্বাস মা দুর্গার কৃপায় এই সংকট কেটে যাবে।”
বার্তার শেষে তিনি মানবতার জয়গান গেয়ে বলেন, “মানবতার কোনও জাত নেই, ধর্ম নেই, সম্প্রদায় নেই—মানুষ কেবল মানুষ। বাংলার যেকোনো উৎসবে উদযাপন হয় একটাই ধর্মের, তার নাম মানব ধর্ম।”