সংখ্যালঘুদের বেনজির আক্রমণ বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদের, নিন্দা দেশজুড়ে
বিজেপির নেতা নেত্রীদের এই বিতর্কিত মন্তব্যে মোটেই বিচলিত নয় বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি।

বিজেপি আর বিতর্ক একই মুদ্রার এপিঠ, ওপিঠ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সংখ্যালঘুদেরকে আক্রমণ যেন বিজেপি নেতাদের ‘ইউএসপি’।
বিতর্কর কথা উঠবে আর তাতে আর প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের নাম আসবে না তা প্রায় অসম্ভব। মাঝে মাঝেই আলটপকা মন্তব্য করে বিতর্কে থাকতে পছন্দ করেন মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত তথা মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা বা প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তাঁর আলটপকা মন্তব্যের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন হল ভোরবেলার আজানের ‘প্রতিবাদ’। ভোপালের বিজেপি সাংসদের বক্তব্য, ভোরবেলার আজান ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। রোগীদের রক্তচাপ বাড়ায়। যদিও সরাসরি ‘আজান’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি তিনি।
মঙ্গলবার ভোপালের বেরাসিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে প্রজ্ঞা বলেন,”ভোরবেলায় সাড়ে পাঁচটার সময় খুব জোরে আওয়াজ হয়। সেই শব্দ বাড়তেই থাকে। মানুষের ঘুম ভেঙে যায়। অনেক রোগীর সমস্যা হয়। তাঁদের রক্তচাপ বেড়ে যায়।” বিজেপি সাংসদের অনুযোগ, “ওঁদের প্রার্থনার আওয়াজ বারবার আমাদের শুনতে হয়। কিন্তু তাতে কারও কিছু এসে যায় না। কিন্তু আমরা যখন মাইক ব্যবহার করি বা প্রার্থনা করি, তখনই বিধর্মীদের সমস্যা হয়। ওঁরা নাকি অন্য ধর্মের প্রার্থনা শুনতে পারে না। এটা নাকি ইসলামে বারণ। আমরা হিন্দুরা অন্যদের ধর্মবিশ্বাসের দিকে নজর রাখি কারণ, আমরা সর্বধর্মে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমাদের কি এটা করা উচিত?”
এখানেই শেষ নয়। সংখ্যালঘুদের ধর্মবিশ্বাসকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও।
বুধবার এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “ভারত হিন্দুদের দেশ। এদেশে সব মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।” তাঁর সাফ কথা, “ইন্ডিয়া কথাটা এসেছে ১৯৪৭ সালে। কিন্তু তার আগে ৭ হাজার বছর আমরা পরিচিত ছিলাম হিন্দু হিসাবে। আমি সভ্যতায় বিশ্বাস করি। আর আমি বিশ্বাস করি আমাদের সভ্যতা হিন্দু সভ্যতা।”
তিনি চান সব মাদ্রাসা বন্ধ করে সেখানে মেডিক্যাল কলেজ, ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক। কারণ, মাদ্রাসায় তৈরি হয় ‘মোল্লা’। আর ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরি হয় ডাক্তার, দার্শনিক। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “আমি যদি মুসলিম এলাকায় গিয়ে তাঁদের বলি আমি আপনাদের সন্তানকে মোল্লা নয়, চিকিৎসক বানাতে চাই, তাহলে ওঁদের খুশি হওয়া উচিত।”
যদিও বিজেপির নেতা নেত্রীদের এই বিতর্কিত মন্তব্যে মোটেই বিচলিত নয় বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি। তাদের মতে, ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। সবার মত প্রকাশের অধিকার আছে। তাঁরা তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।