দু’হাজার টাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরায়! দালালচক্রে বিএসএফ-পুলিশের যোগ?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৩৮: মাত্র ২০০০ টাকা দিলেই করা যাবে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় প্রবেশ! সীমান্ত দিয়ে করা যাবে অবাধ যাতায়াত! অভিযোগ উঠছে এই কাজে স্থানীয় দালালদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রশ্রয় দিচ্ছেন শাহি মন্ত্রকের বিএসএফ (BSF) ও রাজ্য পুলিশ (State Police)। ত্রিপুরার (Tripura) খোয়াই মহকুমায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে (Bangladesh Border) অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, মাত্র ২০০০ টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় প্রবেশ করা যাচ্ছে অনায়াসে, শনিবার রাতে করঙ্গী ছড়া সীমান্ত দিয়ে ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। স্থানীয় যুবক শঙ্কু দাস তাঁদের কাছ থেকে মাথাপিছু ২০০০ টাকা নিয়ে সীমান্ত পার করিয়ে দুটি অটোরিক্সায় করে খোয়াই শহরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সোমবাড়িয়া বাজারে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই অটো আটক করে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের বাংলাদেশি (Bangladeshi) বলে শনাক্ত করেন। এরপর উত্তেজিত জনতা দুই অটোচালক বিশ্বজিৎ দাস ও অতীশ দাসকে গণধোলাই দেয়।
ঘটনার খবর পেয়ে চাম্পা হাওর থানার ওসি (OC) এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ১১ জনের মধ্যে ছয়জন স্বীকার করেন, তাঁরা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। তাঁদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে। বাকি পাঁচজন দাবি করেন, তাঁরা কমলপুর ও শিলচরের বাসিন্দা। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মণিরানি দাস, তাঁর দুই কন্যা মহিমা ও পিয়াসা, দেওর দীপন দাস, হৃদয় দাস এবং গোপাল দাস। অন্যদিকে, ভারতীয় দাবিদারদের মধ্যে রয়েছেন প্রণবেশ সরকার, অর্চনা সরকার, প্রিয়তম সরকার, সাগর সরকার এবং সুজিত দাস।
জেলা পুলিশ সুপার রানাদিত্য দাস জানিয়েছেন, ছয় বাংলাদেশির বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা রুজু হয়েছে। দুই অটোচালকের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাঁদের গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আদালত ছয় বাংলাদেশিকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই অনুপ্রবেশের নেপথ্যে থাকা ভারতীয় দালালদের খোঁজে তদন্ত চলছে।
খোয়াই মহকুমায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের (India-Bangladesh border) দৈর্ঘ্য ৬১.৫ কিলোমিটার। ৯৯ শতাংশ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া, ফ্লাডলাইট, সিসিটিভি থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে অভিযোগ। ১০৪ ও ৭০ নম্বর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধীনে থাকা এলাকাগুলিতে নজরদারির ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি বিদ্যাবিল এলাকায় তিন বাংলাদেশি গরু চোর গণধোলাইয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও এই সমস্যার গভীরতা তুলে ধরেছে। আশারামবাড়ি বিধানসভা (Asharambari Assembly) এলাকার সীমান্ত দিয়ে যেভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ঘটছে, তাতে আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।