বাম আমলে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি, চাকরি গেল বর্ধমান জেলার সিপিএম নেতার মেয়ের
অনেকের মতে, প্রাইমারি টেটে এই নিয়োগে গ্রাম, মফস্বলে কাঁচা টাকার লেনদেন চলেছিল। এই সিপিএম নেতাও হয়তো মেয়েকে ‘নিশ্চিন্ত ভবিষ্যৎ’ দিতে তলায়তলায় যোগ রেখে চাকরিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন।

সিপিএম যখন শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে সর্বত্র সরব হচ্ছে, তখন তারা বোধহয় বুঝতে পারে নি তাদের দিকেও তিরটা এভাবে ঘুরে আসতে পারে। বিভিন্ন জায়গায় যখন সিপিএম-এর নেতা-নেত্রীরা চোঙা ফুঁকে বলছেন, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হচ্ছে কেন তৃণমূল কংগ্রেস জবাব দাও, তখন বর্ধমানের কালনার সিপিএম নেতা বীরেন বসুর মেয়ে বৈশাখী বসু মল্লিকের নাম উঠে এল শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি প্রসঙ্গে।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের তদন্ত করবে সিবিআই। সেই সঙ্গে বিচারপতি ২৬৯ জন চাকরিরত প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে এতদিনের মাইনে ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর বিভিন্ন জেলায় তালিকা প্রকাশিত হচ্ছে। পূর্ব বর্ধমানে এরকমই একটি তালিকায় জ্বলজ্বল করছে বৈশাখী বসু মল্লিকের নাম।
কালনার দীর্ঘদিনের বাম কাউন্সিলর তথা সিপিএম নেতা বীরেন বসু মল্লিকের মেয়ে বৈশাখী। তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বীরেনবাবু এবং তাঁর মেয়ে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি রয়েছেন। বাড়ির দরজা ঠকঠকিয়েও সাড়া মেলে নি।
অনেকের মতে, প্রাইমারি টেটে এই নিয়োগে গ্রাম, মফস্বলে কাঁচা টাকার লেনদেন চলেছিল। এই সিপিএম নেতাও হয়তো মেয়েকে ‘নিশ্চিন্ত ভবিষ্যৎ’ দিতে তলায়তলায় যোগ রেখে চাকরিতে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন।
বর্ধমান জেলা সিপিএমের নেতারা এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। দায়সারা ভঙ্গিতে বলেছেন, আইন আইনের পথে চলবে। তবে সিপিএমের এক রাজ্যস্তরের নেতার ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, এমন অনেক লোক রয়েছেন, যাঁরা উপর উপর লালঝান্ডা ধরলেও তলায় তলায় তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং করে চলে।
বাম আমলেও এইসব নিয়োগ নিয়ে অনেক অভিযোগ, ক্ষোভ ছিল। অনেকের মতে, সিপিএম নিজেদের সময়ে ‘কৌশলে’ স্কুল, কলেজ, পঞ্চায়েত, পুরসভায় নিজেদের লোক ঢোকাত। এখন আর তাদের সেই দিন নেই। তবে বহু জায়গাতেই শাসক এবং বিরোধীদলের নেতাদের একাংশের মধ্যে সখ্যতা রয়ে গিয়েছে।