পাকিস্তানে ভরসা নেই, যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলার বার্তা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর, যুদ্ধ কী আসন্ন?
পাকিস্তানের উপর ভরসা করা যায় না, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বার্তা, ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিস্থিতি মাথায় রেখে সেনাকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:২৩: পহেলগাঁও সন্ত্রাসের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এখনও স্বাভাবিক হয়নি। এর মধ্যেই সেনাকে সতর্ক করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে দেশের সেনাকে সব রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে। তা ক্ষণিকের সংঘর্ষ হোক বা দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলা যুদ্ধ, সব কিছুর মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।
বুধবার মধ্যপ্রদেশে এক অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সেনাদের সতর্ক থাকার বার্তা দেন। তাঁর বক্তব্য, আধুনিক সময়ে যুদ্ধ যে কোনও মুহূর্তে হঠাৎ শুরু হতে পারে, আর তার স্থায়িত্ব কতদিন হবে তা কেউ আগে থেকে বলতে পারে না। তিনি বলেন, “যুদ্ধ দু’মাস, চার মাস, এক বছর কিংবা পাঁচ বছরও চলতে পারে। ফলে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে আমাদের প্রস্তুত থাকা উচিত।”
তবে একইসঙ্গে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, “ভারত কখনও কারও জমি দখল করার মানসিকতা পোষণ করে না। কিন্তু যদি আমাদের উপর আক্রমণ হয়, তবে আমরা নিশ্চুপ থাকব না। নিজেদের রক্ষার জন্য প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে দেশ প্রস্তুত।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান, বায়ুসেনা প্রধান এপি সিং এবং নৌসেনা প্রধান দিনেশ ত্রিপাঠী। তাঁদের সামনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বিশেষভাবে প্রশংসা করেন ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর। তিনি বলেন, “এই অভিযান দেশীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। অপারেশন সিঁদুর প্রমাণ করেছে, আত্মনির্ভরতা আর কেবল একটি লক্ষ্য নয়, বরং দেশের ভবিষ্যতের অপরিহার্যতা। আমরা আত্মনির্ভরতার পথে অনেকদূর এগিয়েছি, তবে এখনও অনেকটা পথ বাকি।”
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে লস্করের ছায়া সংগঠন টিআরএফের চার জঙ্গি নৃশংসভাবে হত্যা করে ২৬ নিরস্ত্র মানুষকে। তাদের পথ দেখাতে সাহায্য করেছিল কাশ্মীরেরই এক স্থানীয় জঙ্গি। এর জবাবে ভারতীয় সেনা ৭ মে ভোররাতে চালায় বড়সড় অভিযান। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গিঘাঁটি।
এরপর পাকিস্তান পাল্টা হামলার চেষ্টা চালায়। সীমান্তবর্তী রাজ্যের জনবহুল এলাকা এবং সেনাঘাঁটি ছিল তাদের মূল নিশানা। তবে ভারত শুধু সেই হামলা প্রতিহতই করেনি, পাল্টা আঘাতও হানে। তাতেই ভেস্তে যায় পাকিস্তানের অন্তত ১১টি বায়ুসেনা ঘাঁটি। ভারতীয় সেনার অভিযানে নিহত হয় ১০০-রও বেশি জঙ্গি এবং প্রায় ৩৫-৪০ জন পাক সেনা।
শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদের অনুরোধে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় নয়াদিল্লি। তবে পাকিস্তানের উপর ভরসা করা যায় না বলেই সতর্ক করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর বার্তা, ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পরিস্থিতি মাথায় রেখে সেনাকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।