দুর্গা পুজোয় বিদ্যুৎ ছাড়ে দুর্গার পায়ে মোদীর ছবি বাধ্যতামূলক? দিল্লি সরকারের নির্দেশে তুঙ্গে বিতর্ক
রাজধানীর পুজো কমিটিগুলিকে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা নির্দেশ দিয়েছেন মণ্ডপে দুর্গামূর্তির পায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি রাখতে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৭:০০: দিল্লির দুর্গাপুজো (Durga Puja) ঘিরে তৈরি হলো নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক। অভিযোগ, রাজধানীর পুজো কমিটিগুলিকে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা নির্দেশ দিয়েছেন মণ্ডপে দুর্গামূর্তির পায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) ছবি রাখতে। উদ্দেশ্য, প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের জন্য দেবীর আশীর্বাদ প্রার্থনা।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একাধিক পুজো উদ্যোক্তার সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি বিদ্যুতের খরচে (Electricity Cost) ছাড়ের ঘোষণা দেন। জানান, ১২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের (Electric) জন্য কোনো মাশুল লাগবে না। অস্থায়ী মিটারের জন্যও আগের তুলনায় অনেক কম চার্জ নেওয়া হবে। তবে এই ঘোষণার পরেই তিনি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বলেন, “আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন। প্রতিটি প্যান্ডেলে দুর্গার পায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি রাখুন, তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্যের জন্য আশীর্বাদ কামনা করুন।”
এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে। দিল্লি ও আশপাশে শ’তিনেক দুর্গাপুজো হয়, বেশিরভাগেরই উদ্যোক্তা বাঙালি। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক তোষামোদের জায়গা নেই। এক উদ্যোক্তার বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী একদিকে বিদ্যুতে ছাড় দিচ্ছেন, অন্যদিকে মোদীর ছবি রাখতে বলছেন। এটা আসলে শর্ত চাপানোর মতো।” আরেকজন স্পষ্ট বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ভগবান নন, তাঁর ছবি দেবীর পায়ের কাছে রাখা যাবে না। এমন নির্দেশ মানা সম্ভব নয়।”
রাজনৈতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তৃণমূল (TMC) সাংসদ মালা রায় (Mala Roy) কটাক্ষ করে বলেন, “মা দুর্গার চালার পেছনে শিবের ছবি থাকে। সেটার জায়গায় যদি মোদীর (Modi) ছবি বসাতে চান, সেটা আসলে অতি তোষামোদের উদাহরণ। আগে কখনও কোনও মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলেননি।” কংগ্রেসও (Congress) বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। তবে বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কেউ প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।
দিল্লির পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা কোনওভাবেই রাজনৈতিক শর্ত মেনে পুজো করবেন না। বিদ্যুতের ছাড় না দিলেও তাঁদের আপত্তি নেই। তাঁদের মতে, দুর্গাপুজো একান্তই ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব, সেখানে রাজনৈতিক নির্দেশ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়।