তালিবান বিদেশমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকে মহিলা সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ তীব্র বিতর্কে সরব দিল্লি রাজনীতি

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৩:০৬: আফগান তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি-র সফর ঘিরে নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজধানীতে। শুক্রবার দিল্লিতে আফগান দূতাবাসে তাঁর সাংবাদিক বৈঠকে মহিলা সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার না দেওয়ার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, বৈঠকের স্থানে কোনও মহিলা সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধু পুরুষ সাংবাদিকরাই উপস্থিত ছিলেন। এই বৈষম্য নিয়ে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেন সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মীরা।
আট দিনের ভারত সফরে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন মুত্তাকি। শুক্রবার তিনি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর-এর সঙ্গে বৈঠকের পর আফগান দূতাবাসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। কিন্তু সেখানে মহিলা সাংবাদিকদের উপস্থিত না থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরে জানা যায়, দূতাবাসের তরফে তাঁদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
বিতর্কের জেরে সরব বিরোধীরা। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা সমাজমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে লেখেন, “তালিবান প্রতিনিধির সফরে সাংবাদিক বৈঠকে মহিলা সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া হল কেন? প্রধানমন্ত্রী দয়া করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন।” প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, পুরুষ সাংবাদিকদের উচিত ছিল এই বৈঠক বয়কট করা।
বিতর্কের পর শনিবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানায়, এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। বিবৃতিতে বলা হয়, “গতকাল দিল্লিতে আফগান বিদেশমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকের বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের কোনও ভূমিকা ছিল না।” সরকারের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, দূতাবাসের ভিতরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার সংশ্লিষ্ট দেশেরই থাকে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর এটাই প্রথম কোনও উচ্চপর্যায়ের তালিবান নেতার ভারত সফর। আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের সুযোগ নিয়ে কাবুলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে চাইছে নয়াদিল্লি— যেন আঞ্চলিক সমীকরণে ইসলামাবাদকে চাপের মুখে রাখা যায়।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন তালিবান শাসনের লিঙ্গবৈষম্যমূলক নীতি ফের সামনে এল, তেমনই ভারত সরকারের নীরবতাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। সাংবাদিক সমাজে এ নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বাড়ছে।