সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতিবিজড়িত বিন্দোলের ভৈরবী মন্দিরের কাহিনি জানেন?

ভক্তদের বিপদ আপদের কথা সাধিকা তাঁর সাধনার ক্ষমতা বলে আগেই জানিয়ে দিতেন। মানুষজন বিপদমুক্ত হত।

December 7, 2023 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: উত্তর দিনাজপুরে রয়েছে সুলতানী আমলের স্মৃতিবিজড়িত বিন্দোল গ্রাম। সুলতানী আমলে বিন্দোল, বাংলাদেশের ভাতুরিয়ার জমিদার গণেশ নারায়ণের অধীনে ছিল। এখানেই রয়েছে ভৈরবী মন্দির। লুপ্তপ্রায় কাচ নদীর তীরে মন্দিরটি অবস্থিত। গণেশ নারায়ণ শিবভক্ত ছিলেন। তাঁর উদ্যোগেই ভৈরবী মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়।মন্দিরে দশম শতকের কালোপাথরের কারুকার্য খচিত মার্তণ্ডের মূর্তি রয়েছে। মূল মূর্তিটি এলাকায় মার্তণ্ড ভৈরবের মূর্তি বলে পরিচিত। মূর্তিটির উচ্চতা সাড়ে তিনফুট, দশভূজ বিশিষ্ট। কথিত আছে, কোনও এক সাধিকা মন্দিরে ভৈরবের পুজো দিতেন। স্থানীয়রা তাঁকে ভৈরবী নামে ডাকত। তাঁর নামেই ভৈরবী মন্দির নামে পরিচিতি লাভ করে। ভক্তদের বিপদ আপদের কথা সাধিকা তাঁর সাধনার ক্ষমতা বলে আগেই জানিয়ে দিতেন। মানুষজন বিপদমুক্ত হত।

হেরিটেজ তকমা মিললেও মন্দিরটি বহুদিন অযত্ন, অবহেলায় পড়েছিল। ভক্তরা পুজো দিতে আসতেন। ২০১২ সালে ভৈরবী মন্দিরটি রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব ও সংগ্রহালয় বিভাগ সংস্কার করে। রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে বিশ্রামাগার, শৌচালয় গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে এই মন্দির উত্তর দিনাজপুর জেলা তথা উত্তরবঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিবছর শ্রাবণী পূর্ণিমায় মন্দিরে বিশেষ পুজো হয়। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মালদহের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালীন মন্দির চত্বরে ঘুরতে আসেন।

মন্দিরটি দক্ষিণমুখী, একচূড়া মন্দির। বিভিন্ন আকারের ইট, পাথর, চুন, সুরকি দিয়ে গড়া হয়েছিল মন্দির। মন্দিরে কেবল একটিই ছোট দরজা। একসময় দেওয়ালের পোড়ামাটির কারুকার্যখচিত শিল্প নিদর্শন ছিল। পশ্চিম দেওয়ালের চিরাগ ও গম্বুজাকৃতি চূড়া মুঘল স্থাপত্যের পরিচয় বহন করে। মন্দিরের উত্তর-পূর্ব কোণে সুড়ঙ্গ রয়েছে, পুজোর সময় এই সুড়ঙ্গে এক সময় ফুল বেলপাতা ফেলা হত। সেই ফুল বেলপাতা মন্দির থেকে চারশো মিটার দূরে তালদিঘিতে ভেসে উঠত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen