শুল্কের কারণেই ভারত-মার্কিন সম্পর্কে ফাটল, স্বীকারোক্তি ট্রাম্পের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭.৪৫: দীর্ঘদিনের চাপা উত্তেজনার পর অবশেষে সুর বদলালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত যে দুই দেশের সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে, তা এবার নিজেই স্বীকার করলেন তিনি।
সম্প্রতি ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “ভারত রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা। তাই তাদের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপাতে হয়েছে। এটা সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না। কিন্তু এই শুল্কই ভারত-আমেরিকার সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে”।
এই মন্তব্যের পরই ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ সম্পর্ক থাকলেও, এবার তিনি ধৈর্য হারাচ্ছেন। তিনি বলেন, “যুদ্ধ থামাতে পুতিন ব্যর্থ। এবার আমাদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”
ট্রাম্পের এই স্বীকারোক্তির পর তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ’-এ একটি বার্তা প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি লেখেন, , ‘অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি দীর্ঘ বাণিজ্য জট ছাড়াতে দুই মহান দেশ ভারত ও আমেরিকার মধ্যে আলোচনা চলছে। আমার প্রিয় বন্ধু প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী। আমার বিশ্বাস দুই মহান দেশের এই আলোচনা শীঘ্রই সমস্ত বাধা পেরিয়ে চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছবে।’
তবে এই আশাবাদী বার্তার পেছনে রয়েছে কঠিন বাস্তবতা। ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করলে, ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে কোনও আলোচনা করবে না বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
ভারতের উপর প্রথমে ২৫ শতাংশ এবং পরে তা বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়, যা আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম উচ্চ শুল্ক হার। এই পদক্ষেপ ভারতের রপ্তানি খাতে বড় ধাক্কা দিয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বাণিজ্য আলোচনায় স্থবিরতা এনেছে।
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রুশ তেল কেনা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। অন্যদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন এই ক্রয়কে ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়ন হিসেবে দেখছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত বার্তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ গলানোর ইঙ্গিত দিলেও, বাস্তব সমাধান নির্ভর করবে আলোচনার গতি ও পারস্পরিক ছাড়ের উপর।