বাম জমানার অবৈধভাবে হস্তান্তরিত ২০০ কোটি টাকার জমি ফেরাবে রাজ্য

এই ‘অবৈধ’ জমি হস্তান্তরে সরকারের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে বলে সিএজি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে।

August 18, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবি: প্রতীকী

বাম জমানায় প্রায় ২০০ কোটি টাকার লিজে দেওয়া হয়েছিল একটি সরকারি জমি। ওই জমি অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবার সেই জমি ফেরাতে সচেষ্ট হল। কৃষ্ণনগর শহরের উপকন্ঠে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তরের অধীনে থাকা ১৪০০ কাঠা জমি ২০০৫-’০৬ সালে ‘হাইব্রিড সিডস’ নামের এক বেসরকারি সংস্থাকে তুলে দেওয়া হয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সঙ্গে তাদের পাঁচ বছরের যৌথ উদ্যোগের চুক্তি হয়। গাছের চারা, ফল, বীজ সহ একাধিক সামগ্রী তৈরির কথা ছিল। কিন্তু পাঁচ বছরে কোনও কাজ করেনি ওই বেসরকারি সংস্থা। তারপরও অদ্ভুতভাবে ২০০৯ সালে ‘হাইব্রিড সিডস’কে ৯৯ বছরের জন্য ফের লিজ দেওয়া হয় ওই জমি। উল্লেখ্য, সেই সময় ওই বিভাগের সচিব ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। বামফ্রন্ট জমানার ওই জমি হস্তান্তর নিয়ে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) তীব্র আপত্তি তুলেছিল। এই ‘অবৈধ’ জমি হস্তান্তরে সরকারের মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে বলে সিএজি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে। 


সম্প্রতি রাজ্যের নবনিযুক্ত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন মন্ত্রী সুব্রত সাহার কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। সেখানে ‘হাইব্রিড সিডস’-এর মালিক অরুণ আগরওয়ালের বিরুদ্ধে এই বিরাট পরিমাণ জমি অবৈধভাবে দখলে রেখে দেওয়ার পাশাপাশি আরও অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অভিযোগকারী বলেছেন, দপ্তরের অফিসার ও কর্মীদের একাংশের সঙ্গে অশুভ আঁতাত রয়েছে অরুণ আগরওয়ালের। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তর প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার ফুল ও ফলের গাছ, বীজ সহ বিভিন্ন সামগ্রী কেনে। বিভাগীয় অফিসারদের সঙ্গে সখ্যের জেরে তার সিংহভাগের বরাত পায় ‘হাইব্রিড সিডস’। চিঠিতে অভিযোগকারী লিখেছেন, দপ্তরের অধীনস্থ কর্পোরেশনের ডিরেক্টর এনাউল রহমানের সঙ্গে অরুণ আগরওয়ালের দহরম-মহরম রয়েছে। কর্পোরেশনের আরও এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী সুব্রত বসুর বিরুদ্ধেও মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। অবসরের পর পাঁচ বছর হয়ে গেলেও তিনি কর্পোরেশনে দিব্যি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে এনাউল রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি দপ্তরের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।
প্রতিক্রিয়া জানতে মন্ত্রী সুব্রত সাহার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, মন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি মতো স্বচ্ছ প্রশাসন সুনিশ্চিত করতে অবৈধভাবে দেওয়া এই জমি ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সুব্রত গুপ্ত। তাঁর কথায়, দপ্তরের কাছে জমি কেলেঙ্কারি ও বরাত প্রাপ্তি সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই ওই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগ সংক্রান্ত চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen