মেট্রো রেলের ই-পাস দেওয়ার নামে কালোবাজারি কলকাতায়

নোয়াপাড়া, টালিগঞ্জ, রবীন্দ্র সদন, বেলগাছিয়া, কবি নজরুল সহ কয়েকটি স্টেশনের বাইরে এই ‘ই-পাস ব্ল্যাকার’দের দেখা গিয়েছে বলে মেট্রো সূত্রে খবর।

September 15, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

এ যেন অবিকল নব্বইয়ের দশকের সিনেমা হলের বাইরের দৃশ্য। নতুন কোনও সিনেমা আসলেই প্রথম দিনে টিকিট ব্ল্যাকারদের রমরমা থাকত। আজকের এই অনলাইন বুকিংয়ের যুগে অবশ্য সেসব ইতিহাস হয়েছে। কিন্তু, সোমবার সাধারণের জন্য মেট্রোর দরজা খুলতেই ফিরল সেই ‘নস্টালজিয়া’। সৌজন্যে মেট্রো রেলের ই-পাস। মহার্ঘ্য এই ‘ডিজিটাল অনুমতি পত্র’ না পেলে মেট্রো যাত্রার অনুমতি মিলবে না। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই এবার কালোবাজারির অভিযোগ উঠল শহরে। অভিযোগ উঠেছে, ডিজিটাল মাধ্যমে অনভ্যস্তদের থেকে টাকা নিয়ে ই-পাস পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিচ্ছে কিছু যুবক। এখনও ‘স্মার্ট’ নাগরিক না হয়ে ওঠা এই যাত্রীদের হাতে ই-পাসের কালার প্রিন্ট ধরিয়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। নোয়াপাড়া, টালিগঞ্জ, রবীন্দ্র সদন, বেলগাছিয়া, কবি নজরুল সহ কয়েকটি স্টেশনের বাইরে এই ‘ই-পাস ব্ল্যাকার’দের দেখা গিয়েছে বলে মেট্রো সূত্রে খবর।

এ প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশি বলেন, ‘রাত পর্যন্ত এমন কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে এটা ঠিক, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ই-পাস বের করতে অনেকেরই কিছু সমস্যা হচ্ছে। বহু মানুষ পরিচিতদের থেকে সাহায্য নিচ্ছেন। কিন্তু তাই বলে ই-পাস জেনারেট করে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করা একেবারেই বেআইনি।’ তাঁর দাবি, মেট্রো চত্বরের মধ্যে এই অসাধু চক্র সক্রিয় হয়নি। স্টেশনের আশেপাশের এলাকায় হয়ে থাকতে পারে। জেনারেল ম্যানেজার আরও বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আরপিএফ জওয়ানদের সতর্ক করা হবে। পাশাপাশি কলকাতা পুলিসকেও বিষয়টি জানিয়ে রাখা হবে।’

মেট্রো সূত্রের খবর, স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফেই এই অভিযোগ মিলেছে। জানা গিয়েছে, সাইবার ক্যাফে রয়েছে কিংবা প্রযুক্তিতে দড় কিছু যুবক এই কাজে নেমেছে। স্টেশনে ঢোকার অনেক আগে থেকেই তারা ওত পেতে থাকছে। টিকিট না কাটা যাত্রীদের যেমন হাবভাব দেখে ধরে ফেলেন বাসের কন্ডাক্টর, অনেকটা সেই কায়দায় সজাগ নজর রাখছে তারা। সম্ভাব্য ‘শিকার’ খুঁজে পেলেই ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে ই-পাসের প্রস্তাব। সঙ্গে থাকছে কালার প্রিন্ট হাতে ধরানোর প্রতিশ্রুতিও। একেক জনের কাছে এক এক রকম টাকা দাবি করা হচ্ছে। দাম ঘোরাফেরা করছে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। বিষয়টি ঘুরিয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতার এক ব্যস্ত মেট্রো স্টেশনে ই-পাস পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত আরপিএফ জওয়ানও। তাঁর দাবি, ‘এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ এক প্রৌঢ় এসে মেট্রোয় ওঠার অনুরোধ করেন। আমরা তার কাছে ই-পাস দেখতে চাই। কিন্তু, তা না থাকায় আমরা ওই প্রৌঢ়কে ফিরিয়ে দেই। কিন্তু ২০ মিনিট পর ওই ব্যক্তি হাতে কালার প্রিন্টআউট নিয়ে গটগট করে ঢুকে গেলেন। বৈধ ই-পাস থাকায় আমরাও তাঁকে আটকাইনি। কিন্তু, ওইটুকু সময়ে তিনি পাস-এর কালার প্রিন্ট জোগাড় করলেন কীভাবে, তা নিয়ে আমারও খটকা লেগেছিল।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen