৮০ শতাংশ এলাকায় জরুরি পরিষেবা স্বাভাবিক

May 26, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রাতারাতি ছবিটা বদলে গেছে, দুর্ভোগ পুরো মুছে গেছে বা ক্ষোভ পুরো প্রশমিত হয়ে গিয়েছে, এমনটা হয়তো বলা যাবে না। তবে রবিবারের তুলনায় সোমবার রাত পর্যন্ত পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। উম্পুন-তাণ্ডবের পর পাঁচ দিনের দিন পুরসভা-পুলিশ-বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি এনডিআরএফ-সেনাবাহিনীর রাতভর লড়াইয়ে বেশ কিছু এলাকায় গাছ সরিয়ে ফেরানো সম্ভব হয়েছে বিদ্যুৎ। চালু হয়েছে পানীয় জল পরিষেবা।

তবে সর্বত্র যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে, এমনটা নয়। খাস কলকাতার ছ’-সাতটি এলাকা-সহ বিভিন্ন জেলায় এখনও কিছু অঞ্চল বিদ্যুৎহীন, স্নান ও পানীয় জলের দাবিতে চলেছে বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভও। কোথাও কোথাও সাময়িক প্যাচওয়ার্ক করে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা গেলেও পানীয় জলের পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। কলকাতা পুরসভা, সিইএসসি ও রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।

এদিন এক প্রেস বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘রাজ্যের ভয়াবহতম প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ৮০ শতাংশ এলাকায় জরুরি পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। অধিকাংশ শহর এলাকায় জরুরি পরিষেবা চালু হয়ে গিয়েছে।’ শহরের পরিস্থিতি দু’-তিনদিনে আরও স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।

বিপর্যয়ের মধ্যে জনজীবন স্বাভাবিক করতে দিনরাত এক করে প্রাণপাত করছেন যাঁরা, তাঁদের প্রত্যেককে কুর্নিশ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী, কেন্দ্র ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ওডিশা সরকারের কর্মীদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে রাজ্য সরকারের যে সব কর্মী ও পুলিশ দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে আমার অভিনন্দন। বিদ্যুৎ, পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক করা, রাস্তা থেকে গাছ সরানো, ত্রাণ বণ্টন থেকে পরিকাঠামোর হাল ফেরানো ও বিস্তীর্ণ এলাকায় শান্তি বজায় রাখার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছেন তাঁরা।’ এই লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের সহযোগিতাও চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

সিইএসসি-র তরফ থেকে এ দিন দাবি করা হয়েছে, শহরের ৯৫ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়েছে। ওয়ার্ড ধরে ধরে কাজ চলছে। তবে সিইএসসি-র ভূমিকা নিয়ে এ দিনও অসন্তোষ প্রকাশ করেন ফিরহাদ হাকিম। সোমবার বিকেলে তিনি নিজেই প্রশ্ন তোলেন, ‘পুরসভার ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর খুঁজেই পাচ্ছেন না সিইএসসি কর্মীদের। এখনও বেহালা, যাদবপুর, বাঘাযতীন, টালিগঞ্জ-সহ দক্ষিণের বিভিন্ন অংশে কাজ বাকি। নতুন করে তার তো লাগাতে হবে না। একটা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, সেটা জুড়ে দেওয়ার কাজ করতে হবে। কেন এত পরিকল্পনার অভাব?’

বিদ্যুৎসংস্থার উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘এনাফ ইজ এনাফ। আর কত ধৈর্য ধরব?’ শহরের নাগরিকদের তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ‘দু’-তিন দিনের মধ্যেই শহরের পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে। আপাতত অস্থায়ী ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে।’ তারপর সিইএসসি সমীক্ষা চালিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নেবে।

তবে মেয়রের দুঃখপ্রকাশ ও আশ্বাস সত্ত্বেও শহরের সর্বত্র বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হওয়ায় তিতিবিরক্ত মানুষ বিক্ষোভ দেখান বেশ কিছু এলাকায়। বাঘাযতীন, বিদ্যাসাগর, বেহালার হরিদেবপুর বাদামতলা, কালীতলা, ডায়মন্ড পার্ক, চারু মার্কেট, গড়িয়ার পদ্মশ্রী সিনেমা, গরফার সাঁপুইপাড়া, সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্ক, নেতাজি নগরের বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। তাতে সামিল হয়েছেন অভিজাত আবাসন থেকে বস্তি এলাকার বাসিন্দারাও। কিছু জায়গায় রাস্তা অবরোধের জেরে ভোগান্তি হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে রাস্তায় বেরনো সাধারণ মানুষকে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen