সুব্রত মুখার্জির স্বপ্নপূরণ, বাংলায় চালু হচ্ছে প্রথম পুরুষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী

November 11, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

সদ্য প্রয়াত পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ‘আনন্দধারা’ প্রকল্প। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মহিলা রোজগারের উপায় পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তৈরি এই প্রকল্পে। সেই ধাঁচেই পুরুষদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন সুব্রতবাবু। এবার তাঁর সেই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করার পথে রাজ্য। দপ্তরের কর্তাদের দাবি, পুরুষদের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ার উদ্যোগ দেশে এই প্রথম।


স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মতো করে পুরুষদের যে গ্রুপ বা গোষ্ঠী তৈরি হবে, তা সরকারিভাবে ‘প্রোডিউসার্স গ্রুপ’ হিসেবে চিহ্নিত হবে। এই গ্রুপগুলি ছোট ছোট ব্যবসার কাজে নিযুক্ত থাকতে পারবে। সেই কাজেই সাহায্য করবে সরকার। ব্যবসার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের একাধিক স্কিম বিভিন্ন দপ্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সেই স্কিমগুলিকে এক ছাতার তলায় এনে পুরুষদের সুযোগ দেওয়া হবে। রাজ্য সমবায় দপ্তরের আওতায় যে কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলি আছে, সেগুলি থেকে এই গ্রুপের সদস্যরা সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারবেন। দপ্তর সূত্রে খবর, প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলি যাতে ঋণ দিতে উদ্যোগী হয়, তার জন্য আলাপ আলোচনা চালাবে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে উদ্যান পালন, পশুপালন, মৎস্যচাষ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহণ বা পণ্য মজুতকরণের মতো ব্যবসা বেছে নিতে পারবেন পুরুষরা। 


কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে আসার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। তাতে গ্রামীণ অর্থনীতির পাল থেকে যেমন হাওয়া সরে যাচ্ছে, তেমনই শহরে বাড়ছে কাজের প্রতিযোগিতা। এই সমস্যা কাটাতেই পুরুষদের গোষ্ঠী তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছে পঞ্চায়েত দপ্তর।


স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিতে প্রতিটি সদস্যকেই আর্থিক দায় নিতে হয়। সেই কারণেই এগুলিকে ‘জয়েন্ট লায়াবিলিটি’ গ্রুপ বলা হয়। প্রস্তাবিত গ্রুপগুলির ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম বলবৎ থাকবে। ব্যক্তিগতভাবে গোষ্ঠীর সদস্যরা ঋণ পেতে পারেন, কিন্তু অন্য সদস্যের ঋণ শোধের ব্যাপারেও প্রত্যেকের দায় থাকবে। গ্রুপের সদস্যরা সবাই মিলে যে কোনও একটি নির্দিষ্ট আর্থিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। সর্বোচ্চ ১০ জন সেই গ্রুপে থাকতে পারেন। তবে সুষ্ঠুভাবে একটি গোষ্ঠীকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চার থেকে পাঁচ জনকে নিয়েই গ্রুপ গড়তে চায় রাজ্য।


জানা গিয়েছে, এই প্রস্তবিত গ্রুপের প্রতিটি সদস্য প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। তবে কে কত টাকা ঋণ নেবেন, তা নির্ভর করবে তাঁদের কাজ বা ব্যবসার ধরনের উপর। সবাইকে সমান অঙ্কের টাকা ঋণ নিতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। প্রতিটি গোষ্ঠীকে ঋণের হিসেব কষতে হবে এবং সেই তথ্য ব্যাঙ্ক শাখায় জমা করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ব্যাঙ্ক প্রতিটি সদস্যের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা যাচাইয়ের পর ঋণের ব্যবস্থা করবে।  


কৃষকরাও যাতে এই ধরনের গ্রুপ তৈরি করতে পারেন, তারও উদ্যোগ নেবে সরকার। সেক্ষেত্রে সবারই যে কৃষিজমি থাকতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। ভাগচাষ বা অন্যান্য ক্ষেত্রের কৃষকদেরও সেই সুযোগ দেওয়া হবে। মোট কথা, গ্রাম ও আধা শহরগুলিতে পুরুষদের আর্থিক দিশা দেখাতে নয়া উদ্যোগে ঝাঁপাতে চলেছে পঞ্চায়েত দপ্তর।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen