মৃত্যুপুরী গাজায় শুধুই হাহাকার

ইজরায়েলের ছোঁড়া রকেটে শেষ হয়ে গিয়েছে পরিবার।

May 19, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ইজরায়েল (Israel)-প্যালেস্তাইনের সংঘর্ষে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ছোট্ট শহর গাজা। একের পর এক রকেট হানায় উপকূলবর্তী শহরটি এখন যেন মৃত্যুপুরী। পোড়া বারুদের সঙ্গে মিশেছে পুড়তে থাকা চামড়ার গন্ধ। আর এই ধ্বংসস্তূপের ধসে পড়া ইট, কাঠ, পাথরে লেখা হচ্ছে একের পর এক হৃদয়বিদারক কাহিনী। এই গল্পটা যেমন হাসপাতালের এক শয্যায় নিজের শেষ সম্বলকে আঁকড়ে ধরে থাকা মহম্মদ আল হাদিদির।

ইজরায়েলের ছোঁড়া রকেটে শেষ হয়ে গিয়েছে পরিবার। জ্বলে খাক হয়ে গিয়েছে স্ত্রী, তিন সন্তান। সহায় এখন পাঁচ মাসের ছেলে ওমর। অবিশ্বাস্য ভাবে ধ্বংসলীলার মাঝেও বেঁচে গিয়েছে সে। ধ্বসংসস্তূপের মাঝে মৃত মা দুই হাতে আঁকড়ে ধরেছিল তাকে।মায়ের আশ্রয়ই এ যাত্রায় বাঁচিয়ে দিয়েছে ওমরকে। পাথরের স্তূপের মাঝে ছোট দুটো পা নড়তে দেখে তাকে উদ্ধার করে ওই উদ্ধারকারী দল। তবে ওমরের একটি পায়ের তিন জায়গা ভেঙেছে। আপাতত বাবার সঙ্গে হাসপাতালেই রয়েছে সে। তাকে কোলে জড়িয়ে বসে থাকা মহম্মদ আল হাদিদির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

হাদিদির কথায়, “আমার আর কেউ রইল না। শেষ সম্বল ওমর। তবে আমরাও আর বেশিদিন এখানে থাকব না। খুব শীঘ্রই উপড়ে গিয়ে পরিবারের সকলের সঙ্গে মিলিত হব।” কথাটা বলার সময় গলা ধরে আসছিল তাঁর। চোখের কোণা দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল। আর খুদে খুদে চোখ মেলে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসছে ওমর। যেন কোথাও কোনও ধ্বংস নেই, মৃত্যু নেই!

ইদের পরদিনই পরিবার হারিয়েছেন হাদিদি। কীভাবে ঘটল সেই ঘটনা? সেদিনের স্মৃতি মনে পড়লেই শিউড়ে উঠছেন হাদিদি। বলছেন, “ইদের নতুন পোশাক পরে স্ত্রীর সঙ্গে মাসির বাড়ি গিয়েছিল আমাদের চার সন্তান। গাজা শহরের বাইরের শাতি রিফিউজি ক্যাম্পে সেদিন রাতে থেকে গিয়েছিল ওরা। অনেক অনুরোধের পর অনুমতি দিয়েছিলাম। রাত তিনটে নাগাদ ভয়াবহ শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। প্রতিবেশীরা জানায়, রকেট হানায় আমার আত্মীয়ের বাড়ি গুঁড়িয়ে গিয়েছে। ছুটে গিয়ে দেখি, গোটা এলাকা কার্যত মাঠে পরিণত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে দেহাবশেষ। তার মধ্যে থেকেই ওমরকে খুঁজে পাই।” একা হাদিদি নন, গাজাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এরকম একাধিক পরিবার। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়ে নিঃশব্দে মৃত্যুর দিন গুনছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen