‘শ্রাবণে শুধু নিরামিষ’ দাবিতে KFC-তে হিন্দুত্ববাদীদের হামলা, ভাইরাল ভিডিও ঘিরে উত্তেজনা
পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভিডিওটি নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।


নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:২৬: ধর্মীয় আবেগ কী ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে? শ্রাবণ মাসে আমিষ খাবার বিক্রি চলবে না, ফতোয়া জারি করে কেএফসি আউটলেটে হামলা চালাল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে বৃহস্পতিবার এক কেএফসি (KFC) আউটলেটে হামলার ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগ, হিন্দু রক্ষা দল নামে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা ওই আউটলেটে হামলা চালান এবং শ্রাবণ মাসে আমিষ খাবার বিক্রি করা যাবে না এই দাবিতে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করেন।
শ্রাবণ মাসে আমিষ বিক্রির বিরোধিতায় গাজিয়াবাদে একাধিক খাবারের দোকানে বিক্ষোভ দেখায় কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা। কেএফসি-র পাশাপাশি এ বার তাদের ক্ষোভের লক্ষ্য হয় স্থানীয় জনপ্রিয় রেস্তরাঁ ‘নাজির’। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আউটলেটের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদকারীরা হাতে ধ্বজা (পতাকা) নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
ভিডিয়ো ফুটেজে আরও দেখা যাচ্ছে, এই বিক্ষোভকারীরা গাজিয়াবাদের একটি কেএফসি আউটলেটের শাটার জোর করে নামিয়ে দিচ্ছেন। দোকান বন্ধ করার পর তারা সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ ‘হর হর মহাদেব’ ধ্বনি দিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এই ঘটনাটির একটি ভিডিও দ্রুত সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং তা ঘিরে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি দৃষ্টিভঙ্গি।
সংবাদসূত্রে জানা গিয়েছে, ‘নাজির’-এর বাইরেও কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন, যার জেরে রেস্তরাঁর স্বাভাবিক কার্যকলাপে ব্যাঘাত ঘটে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ‘কেএফসি’ ও ‘নাজির’, উভয় প্রতিষ্ঠানই সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
একটি ভাইরাল ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা হঠাৎ করেই রেস্তোরাঁর ভিতরে ঢুকে পড়ছেন এবং কর্মীদের মুখোমুখি হচ্ছেন। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং বিক্ষোভকারীদের শান্ত করে। পরে কেএফসি-র শাটার নামানো দোকানের সামনে একটি নোটিশ লাগানো হয়, যেখানে লেখা হয়, ‘শ্রাবণ মাসে কেবল নিরামিষ খাবারই পরিবেশন করা হবে’।
এই ঘটনাক্রম ঘিরে সমাজমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। অনেকে একে ধর্মের নামে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও ব্যবসার উপর হস্তক্ষেপ বলে সমালোচনা করছেন, অন্যদিকে কিছু অংশ এই প্রতিবাদকে ‘সনাতনী সংস্কার রক্ষার প্রয়াস’ হিসেবে সমর্থনও জানাচ্ছেন।
প্রশাসনের তরফে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না মিললেও, পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভিডিওটি নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।