SIR-এর জন্য আর কত প্রাণ যাবে? নদীয়ায় BLO-র মৃত্যুর ঘটনায় কমিশনকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৪৫: বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR-এর কাজ ঘিরে রাজ্যে আরও এক ট্র্যাজেডি। নদীয়ার কৃষ্ণনগরে আত্মহত্যা করেছেন ৫১ বছরের রিঙ্কু তরফদার, চাপড়ার ২০১ নম্বর বুথের BLO ও পার্শ্বশিক্ষিকা। শনিবার সকালে তাঁর ভাড়াবাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পাশে পাওয়া সুইসাইড নোটে তিনি নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন।
রিঙ্কুর চিঠিতে লেখা, “আমার এই পরিণতির জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থক নই। খুব সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই অমানুষিক কাজের চাপ আর নিতে পারছি না।” তিনি জানান, অফলাইনের কাজ শেষ হলেও ডিজিটাল কাজ না জানায় চরম চাপের মধ্যে ছিলেন। সুপারভাইজারকে জানিয়েও সাহায্য পাননি। তাঁর কথায়, “বিএলও কাজ তুলতে না-পারলে প্রশাসনিক চাপ এলে তা আমার পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়।”
চিঠিতে পরিবারকে দায়মুক্ত করে তিনি লিখেছেন, সংসারে অভাব না থাকলেও SIR-এর চাপে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। স্বামী অসীম তরফদারের অভিযোগ, “রিঙ্কুর ডিজিটাল কাজ জানা ছিল না। আমরা জানিয়েও সমাধান পাইনি। এটা আত্মহত্যা নয়, কমিশনের চাপেই মৃত্যু।”
ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন, “এসআইআরের চাপে এভাবে আর কত জীবন নষ্ট হবে? আর কত মৃতদেহ গুনতে হবে? এটা এবার অত্যন্ত গুরুতর ব্যাপার হয়ে উঠছে!! ” মুখ্যমন্ত্রী বারবার কমিশনের কাজ বন্ধের আবেদন করলেও পরিস্থিতিতে কোনও পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি আরও লেখেন, “আজ কৃষ্ণনগরে আরও এক জন BLO, এক মহিলা প্যারা-শিক্ষিকা আত্মহত্যা করেছেন-এই খবর শুনে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। AC ৮২ চাপড়া কেন্দ্রের পার্ট নম্বর ২০১-এর BLO, শ্রীমতি রিঙ্কু তরফদার, আত্মহত্যার আগে তাঁর সুইসাইড নোটে নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন (তার কপি এখানে সংযুক্ত রয়েছে)। তিনি আজ নিজের বাড়িতেই আত্মহত্যা করেছেন।“
গত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যে একের পর এক বিএলও-র মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। পূর্ব বর্ধমানের নমিতা হাঁসদা, জলপাইগুড়ির শান্তিমুনি ওঁরাও-দু’জনের ক্ষেত্রেই পরিবারের দাবি ছিল, SIR-এর অতিরিক্ত কাজের চাপই মৃত্যুর কারণ। হুগলির কোন্নগরের এক বিএলও (BLO) বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।
এই পরিস্থিতিতে শাসকদল তৃণমূল কমিশন এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, “কমিশনের জটিল ডিজিটাল প্রক্রিয়া, অবাস্তব সময়সীমা এবং রাতভর তদারকির নামে মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। মানুষ মরছে, আর বিজেপি রাজনৈতিক লাভ তুলতে ব্যস্ত।”