কীভাবে শুরু হয়েছিল বাংলার প্রথম বারোয়ারি দুর্গাপুজো?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৩০: বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। আজ দুর্গাপুজো সর্বজনীন উৎসব। এককালে কেবল ধনীদের বাড়িতেই দেবী দুর্গার পুজো হত। ১৫৮০ নাগাদ বারো ভুঁইয়াদের অন্যতম কংসনারায়ণ ধুমধাম করে দুর্গাপুজো করেছিলেন। ১৬০১ সাল নাগাদ নদিয়ায় প্রথম দুর্গাপুজোর সূচনা শুরু করেন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পূর্বপুরুষ ভবানন্দ মজুমদার। পলাশীর যুদ্ধের পরবর্তী সময় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে উৎসবের চেহারা নেয় দুর্গাপুজো। শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজোও পলাশীর যুদ্ধের বছর শুরু হয়েছিল।
দুর্গাপুজোর আয়োজিত হত পয়সাওয়ালাদের বাড়িতেই। কালের নিয়মে রাজার ভাণ্ডারও শূন্য হয়। তেমনই হুগলির গুপ্তিপাড়ার এক ধনী ব্যক্তি দূরাবস্থায় পড়েন। ১৭৯০ সাল (১১৫৯ বঙ্গাব্দ) নাগাদ বন্ধ হয়ে যেতে বসে তাঁর বাড়ির বিন্ধ্যবাসিনী পুজো। তখনই উদ্যোগী হন স্থানীয় বারোজন ব্রাহ্মণ। তাঁরাই চাঁদা তুলে পুজোর আয়োজন করেন। বারো জন ‘ইয়ার’ অর্থাৎ ‘বন্ধু’ থেকে জন্ম হয় ‘বারোয়ারি’ শব্দের। গুপ্তিপাড়ার ‘বিন্ধ্যবাসিনী তলা’র পুজোই বাংলার প্রথম বারোয়ারি পুজো।
বিন্ধ্যবাসিনী আদপে কে?
দেবকীর অষ্টমগর্ভে কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল। বসুদেব নিজপুত্রকে গোকুলে রেখে আসেন নন্দের কাছে। অন্যদিকে, মথুরার কারাগারে নিয়ে আসেন নন্দের শিশুকন্যাকে। কংস শিশুটিকে দেবকীর অষ্টমগর্ভজাত সন্তান মনে করে হত্যা করতে উদ্যত হলে, শিশুটি অষ্টভুজা রূপ ধারণ করে। তিনিই দেবী মহামায়া বা যোগমায়া। কংসকে দেবী বলে যান, ‘তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে’। এরপর দেবী বিন্ধ্যাচলে গমন করেন। বিন্ধ্যপর্বতে অবস্থান করার কারণে দেবীর নাম হয় বিন্ধ্যবাসিনী। দেবরাজ ইন্দ্র স্বয়ং দেবীকে বিন্ধ্যাচলে পুজো করেছিলেন। আদপে তিনি দেবী দুর্গার-ই আর এক রূপ।