যুব-অভ্যুত্থানে গদিচ্যুত ওলি, কেমন ছিল নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অতীত?

৭৩ বছরের ওলি  (KP Sharma Oli) নেপালের অভিজ্ঞ বামপন্থী নেতা। উগ্র জাতীয়তাবাদী, চীনপন্থী এবং ভারত-বিরোধী ভাবমূর্তির জন্যও তিনি পরিচিত।

September 9, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:০১: সোমবার সকালে সোশাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা ঘিরে তরুণদের আন্দোলন শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আন্দোলন ভয়াবহ হিংসায় (Nepal Violence) রূপ নেয়। পুলিশি নিরাপত্তাও বিক্ষোভ থামাতে পারেনি। প্রাণ হারান অন্তত ২১ জন। আহত হন তিন শতাধিক। গভীর রাতে সরকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তবুও থামেনি প্রতিবাদ। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। এখন প্রশ্ন উঠছে-শুধুই কি সোশাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা এই বিদ্রোহের কারণ? নাকি এর নেপথ্যে জমে থাকা বহু দিনের ক্ষোভ?

৭৩ বছরের ওলি  (KP Sharma Oli) নেপালের অভিজ্ঞ বামপন্থী নেতা। উগ্র জাতীয়তাবাদী, চীনপন্থী এবং ভারত-বিরোধী ভাবমূর্তির জন্যও তিনি পরিচিত। ২০১৫-১৬ এবং ২০১৮-২১ সালে দু’দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান। দ্বিতীয়বার তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন নেপাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, অভিযোগ ছিল অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের।

১৯৫২ সালে জন্ম ওলির। স্কুলজীবনেই পড়াশোনা ছাড়েন। ২২ বছর বয়সে কৃষক হত্যার অভিযোগে কারাবন্দি হন। কিশোর বয়সে বাম নেতা রামনাথ দাহালের সংস্পর্শে এসে বামপন্থী রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ১৯৭১ সালে নেতৃত্ব দেন ঝাপা বিদ্রোহের, যা নেপালের বাম রাজনীতির একটি বড় বাঁক। মোট ১৪ বছর জেলে কাটিয়েছেন তিনি।

১৯৯০-এর দশকে তিনি মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং দ্রুতই হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় বাম নেতা। ২০১৫ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন, তবে সমর্থন প্রত্যাহারের কারণে অল্পদিনেই গদি ছাড়তে হয়। ২০১৮ সালে ফের ক্ষমতায় এসে প্রতিশ্রুতি দেন-“সমৃদ্ধ নেপাল, সুখী নেপাল।” কিন্তু অভিযোগ ওঠে, মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন তিনি। স্বৈরাচারী মনোভাব, প্রশাসনিক সংস্থাগুলিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনা, ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জোটসঙ্গীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব – সব মিলিয়ে সংকট বাড়তে থাকে।

২০২১ সালে আদালতের নির্দেশে ক্ষমতা হারান। রাজনৈতিক কৌশলে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ফের ক্ষমতায় এলেও স্থায়িত্ব পাননি। প্রাক্তন মিত্র প্রচণ্ডকে ছেড়ে কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গে হাত মেলালেও, ছাত্র-যুবদের প্রবল আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত গদি হারাতে হল তাঁকে। নেপালের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ওলি প্রমাণ করলেন – ক্ষমতায় বারবার ফেরা গেলেও জনতার ক্ষোভকে অগ্রাহ্য করলে শেষ পর্যন্ত পতন অনিবার্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen