গোটা দেশে একই সময়ে বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণের কাজ, এটি পূর্বপরিকল্পিত? প্রশ্ন হাইকোর্টের
এই বক্তব্য শুনে মামলাকারীপক্ষের আইনজীবীকেও ভর্ৎসনা করেন দুই বিচারপতি। তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রকে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:৫৯: হঠাৎ করে কেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি শনাক্ত করার কাজ শুরু হল? প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের (Dr. Ritabrata Mitra) ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের উদ্দেশে বলে, “হঠাৎ করে কেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি শনাক্ত করার কাজ শুরু হল? এর পিছনে কারণ কী? সব রাজ্যের জন্য কেন জুন মাস বেছে নেওয়া হল?” দুই বিচারপতির বেঞ্চ আরও বলে, “ধরুন, পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযানে যায়। একই সময়ে তল্লাশি শুরু হতে পারে। তার পিছনে একটি কারণ থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কী কারণ রয়েছে? পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই কি এটা করা হচ্ছে? অভিযোগ উঠছে, বাংলায় কথা বলার জন্য আটক করা হচ্ছে।”
আদালত আরও মন্তব্য করেছে, “অভিযোগ উঠছে, বাংলায় কথা বললেই অনেককে আটক করা হচ্ছে। এটা হলে কিন্তু ভুল বার্তা যাবে। ভুল সিদ্ধান্ত হয়ে যেতে পারে।” কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল ধীরাজ ত্রিবেদী সাফাই দিয়ে বলেন, “পহেলগাম হামলার পরে সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে কাউকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সব বাংলাভাষীকে নয়। মোট ১৬৫ জনকে আটক করা হয়েছিল, তার মধ্যে ৫ জনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। ওই পাঁচজন স্বীকার করেছেন, তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিক।”
কিন্তু কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক কুমার চক্রবর্তী (Asok Kumar Chakrabarti) এ দিন দাবি করেন, মামলাকারীরা তথ্য গোপন করেছেন। একই বিষয়ে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা চলছে। সেই মামলার তথ্য গোপন রেখে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের সামনে ভুল তথ্য পেশ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। এই বক্তব্য শুনে মামলাকারীপক্ষের আইনজীবীকেও ভর্ৎসনা করেন দুই বিচারপতি। তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রকে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে কেন্দ্রকে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলা হয়েছে যে, কতজনকে আটক করা হয়েছে, কতজনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে, কীভাবে নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই মামলার রাজ্যের তরফে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। তিনি এজলাসে বলেন, “মামলায় খুবই গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে। বাংলায় কথা বলার জন্য অনেককে হেনস্থা করা হচ্ছে। একই মামলা দিল্লি হাই কোর্টে (Delhi High Court) বিচারাধীন থাকলে কিছু বলব না। কিন্তু মূল বিষয়টি হল কে ভারতীয় নাগরিক এবং কে নন কী ভাবে নির্ধারণ করা হল? কত জনকে আটক করা হয়েছে এবং কত জনকে বাংলাদেশে (Bangladesh) পাঠানো হয়েছে তথ্য দিয়ে জানাক কেন্দ্র।”