Independence Day: লালকেল্লা থেকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা মোদীর
ভারত ‘সিন্ধু জলচুক্তি’ বাতিল করে। লালকেল্লা থেকে মোদী ফের স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বর্তমান শর্তে এই চুক্তি পুনরায় চালু হবে না

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ৯:২৫: স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে পাকিস্তানকে একাধিক কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনার পর ভারত ‘সিন্ধু জলচুক্তি’ বাতিল করে। লালকেল্লা থেকে মোদী ফের স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বর্তমান শর্তে এই চুক্তি পুনরায় চালু হবে না। তাঁর কথায়, “রক্ত আর জল একসঙ্গে বইতে পারে না। আমাদের নদীর জল আমাদের কৃষকের অধিকার।” ১৯৬০ সালের এই চুক্তিতে সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগার অধিকাংশ জলের ভাগ পাকিস্তান পেত, যা ভারত বহুদিন ধরেই সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছিল।
প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পরমাণু যুদ্ধের হুমকিরও কড়া জবাব দেন। পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টোর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মোদী বলেন, “বহুদিন ধরে এই হুমকি শুনে আসছি। ভারত আর এটা সহ্য করবে না। প্রয়োজনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাদের ভাষাতেই জবাব দেবে।”
শুল্ক ইস্যুতে আমেরিকার হুঁশকির জবাবে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে শক্ত বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাশিয়া থেকে তেল কেনা ও বাড়তি শুল্ক চাপানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “যাই হোক, ভারতকে কেউ আটকাতে পারবে না।” বিশ্ববাজারে দেশের জায়গা পাকা করার আহ্বান জানিয়ে মোদী জানান, আত্মনির্ভরতার মাধ্যমেই ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্যে পৌঁছবে দেশ। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্যকেও তিনি আত্মনির্ভর ভারতের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “এটাই ইতিহাস রচনার মুহূর্ত। আমাদের বিশ্ববাজার শাসন করতে হবে, উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। মানসম্মত পণ্যের মাধ্যমে ভারতকে তার শক্তি প্রমাণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ”দাম কম, দম বেশি – এই মন্ত্রই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’ প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে মনে করান, ”মূল সমস্যা তখনই হয় যখন আমরা নিজেদের ওপর আস্থা হারাই। অন্যের ওপর নির্ভর হওয়া শুরু করি। নিজেরাই বুঝতে পারি না কী ক্ষতি হচ্ছে। তাই আমাদের উচিত আত্মনির্ভর হয়ে ওঠা।”
এদিকে বাড়তে পারে ভারতীয় সেনার অগ্নিবীরদের মেয়াদ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সেনা অভিযানে অসাধারণ ভূমিকা রাখায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ২০২২ সালে শুরু হওয়া ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প অনুযায়ী বর্তমানে চার বছরের মেয়াদ শেষে মাত্র ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে স্থায়ী করা হয়, বাকিদের অবসর নিতে হয়। তবে সূত্রের খবর, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ অগ্নিবীরদের সাহসী লড়াই শীর্ষ মহলের নজর কেড়েছে। সেই কারণে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে তাঁদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানো ও স্থায়ী হওয়ার হার বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে।
সেনা সূত্রে জানা গেছে, স্থলবাহিনীর বিভিন্ন বিভাগে প্রয়োজন অনুযায়ী অগ্নিবীরদের বেশি সংখ্যায় রাখা হতে পারে। পদাতিক বাহিনীতে ৭০-৭৫ শতাংশ, বিমান প্রতিরক্ষা ও অন্যান্য বিশেষ প্রশিক্ষণ বিভাগে ৮০ শতাংশ এবং বিশেষ বাহিনীতে ১০০ শতাংশ অগ্নিবীর রাখার বিষয় বিবেচনায় রয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী আর্মি কমান্ডার্স কনফারেন্সে হতে পারে এবং পরে সরকারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। নৌসেনা ও বায়ুসেনায় একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়, যদিও বায়ুসেনা ইতিমধ্যেই ২৫ শতাংশের বেশি অগ্নিবীর রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।
অগ্নিবীরদের ভবিষ্যৎ এবং পাকিস্তানকে দেওয়া এই বার্তা মিলিয়ে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বড় ধরনের নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সবশেষে, সেনা ও কূটনৈতিক মহল এখন নজর রাখছে, অগ্নিপথ প্রকল্পে কী পরিবর্তন আসে এবং ভারত-পাক সম্পর্ক কোন পথে এগোয়।