ভারত-আমেরিকার বাণিজ্য বৈঠক: শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত মিলল কি?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১.২৫: শুল্ককে ঘিরে তৈরি হওয়া টানাপোড়েনের মাঝেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনার টেবিলে বসল ভারত ও আমেরিকা। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে বাণিজ্য মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ দপ্তরের প্রতিনিধি দল। তবে শুল্ক প্রসঙ্গে এদিন কোনও পক্ষই সরাসরি মন্তব্য করেনি। বৈঠকের পর ভারত ও আমেরিকা উভয় পক্ষই জানিয়েছে, আলোচনা ‘ইতিবাচক’।
মঙ্গলবার দিল্লিতে মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চ বৈঠক করেন ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের বিশেষ সচিব রাজেশ আগরওয়ালের সঙ্গে। বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, ‘ভারত ও আমেরিকার মধ্যে স্থায়ী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চু্ক্তি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সেই নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। বাণিজ্য চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছি আমরা। দুই পক্ষের জন্যই লাভজনক এমন চুক্তির পক্ষেই সম্মতি জানিয়েছে দুই দেশ।’
মার্কিন দূতাবাস জানায়, বাণিজ্য নিয়ে ভবিষ্যতের পদক্ষেপ নির্ধারণে এই বৈঠক ছিল “খুবই ফলপ্রসূ ও ইতিবাচক।” একই সুর শোনা যায় ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের বিবৃতিতেও। তারা জানায়, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখেই দুই দেশ সমান্তরাল অবস্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা জারি রাখবে।
গত জুলাই মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। এর পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন চরমে ওঠে। ট্রাম্প ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেন, আর তাঁর উপদেষ্টা পিটার নাভারো রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনাকে বলেন ‘ব্লাড মানি’। ভারত অবশ্য এই সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায্য’ আখ্যা দিয়ে প্রশ্ন তোলে-চীন ও ইউরোপীয় দেশগুলো যখন রাশিয়া থেকে বেশি তেল কেনে, তখন শুধু ভারতের ওপরেই কেন শুল্ক চাপানো হল।
সম্প্রতি দুই দেশের নেতাদের বক্তব্যে পরিস্থিতি বদলের ইঙ্গিত মেলে। ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, বাণিজ্য ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং সমাধানের আশা করছেন তিনি। পরের দিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একই সুরে বার্তা দেন। তার পরই এই দিল্লির বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা একাধিক দফা চললেও অগস্টের বৈঠক স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। ফলে মঙ্গলবারের বৈঠককে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে আবার সঠিক পথে ফেরানোর ইঙ্গিত হিসেবেই দেখা হচ্ছে।