‘বিশ্ব মঞ্চে ভারতের প্রধান সম্পদ’, শশী থারুরের মোদী-স্তুতিতে ফের অস্বস্তিতে কংগ্রেস

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৩৫: দলে অস্বস্তি বাড়িয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর (Shashi Tharoor)। সোমবার তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শক্তি, গতিশীলতা এবং সম্পৃক্ততার ইচ্ছা বিশ্ব মঞ্চে ভারতের জন্য ‘প্রধান সম্পদ’ হিসেবে রয়ে গেছে, তা আরও বেশি সমর্থন পাওয়ার যোগ্য।
দিল্লিতে (Delhi) একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তৃতা দেন, তার বিস্তৃত সার তুলে ধরে থারুর X-এ লিখেছেন, তিনি “শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত থাকতে পেরে খুশি”।
থারুর জানান, মোদী ভারতের উন্নয়ন নিয়ে “গঠনমূলক অস্থিরতা”, উপনিবেশ-পরবর্তী মানসিকতার পরিবর্তন এবং দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে বিস্তৃতভাবে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, ভারত আর শুধু “উদীয়মান বাজার” নয়, বরং বিশ্বের কাছে “উদীয়মান মডেল”। তিনি দাবি করেন, কোভিডের মতো বিশ্বব্যাপী ধাক্কা ও ইউক্রেন যুদ্ধের অনিশ্চয়তার মধ্যেও ভারত নিজেদের ধরে রেখেছে।
থারুরের কথায়, প্রধানমন্ত্রী বলেন তিনি সব সময় নির্বাচনী মুডে আছেন বলে অভিযোগ শোনেন, কিন্তু তিনি আসলে মানুষের সমস্যার সমাধানে “ইমোশনাল মোডে” কাজ করেন। বক্তৃতায় বড় জায়গা জুড়ে ছিল ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা। থারুরের ভাষায়, মোদী মেকলে-র রেখে যাওয়া “২০০ বছরের দাস মানসিকতা” কাটিয়ে ওঠার জন্য দশ বছরের জাতীয় প্রচেষ্টার ডাক দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের দৃশ্যে দেখা যায়, থারুরের পাশে বসে আছেন বিজেপি নেতা রবি শংকর প্রসাদ (Ravi Shankar Prasad)। তাঁর অন্য পাশে ছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)।
বক্তৃতায় মোদী মেকলের ভূমিকা নিয়ে বলেন, ব্রিটিশ শাসকরা ভারতীয় শিক্ষার মেরুদণ্ড ভাঙতে চেয়েছিল এবং তার প্রভাব দেশের আত্মবিশ্বাসে দীর্ঘ ছায়া ফেলেছে। ইংরেজি ভাষা ও ব্রিটিশ চিন্তাধারাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার ফলে ভারত বহু বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
থারুরের এই প্রশংসা কংগ্রেসের (Congress) শীর্ষ নেতৃত্বের ভালো চোখে পড়বে না বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব স্পষ্ট হয়েছে। পাহালগাম হামলার (Pahalgam attack) পরে বিদেশে পাঠানো বহুদলীয় প্রতিনিধিদলে তাঁকে অন্যতম মুখ করা এবং বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলোচনার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল।
তার উপর, অপারেশন সিন্ধূরের পর প্রধানমন্ত্রীর “এনার্জি ও ডায়নামিজম” নিয়ে থারুরের মন্তব্যে দলীয় নেতৃত্ব বিরক্ত হয়েছিল। সেই সময় থেকেই জল্পনা বাড়ে তিনি কি বিজেপিতে (BJP) যোগ দিতে পারেন। যদিও থারুর প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, মোদীকে নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য মানেই দলবদল নয়। তাঁর কথায়, এটি দেশের স্বার্থে ঐক্যের বার্তা।
উল্লেখ্য, কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর টানাপোড়েন নতুন নয়। তিনি ছিলেন কংগ্রেসের ভেতরের সংস্কারের দাবিতে তৈরি হওয়া ‘জি-২৩’ গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য। এমনকি দলীয় সভাপতি পদেও লড়াই করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি ভারতীয় রাজনীতিতে বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে একটি প্রবন্ধও লিখেছেন, যেখানে কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দলকে তুলে ধরা হয়।
Attended PM @narendramodi’s #RamnathGoenkaLecture at the invitation of @IndianExpress last night. He spoke of India’s “constructive impatience” for development and strongly pushed for a post-colonial mindset.
The PM emphasized that India is no longer just an ’emerging market’… pic.twitter.com/97HwGgQ67N
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) November 18, 2025