দুর্ঘটনা এড়াতে, আপাতত রোয়িং বন্ধ রেখে নির্দেশিকা তৈরির সিদ্ধান্ত কলকাতা পুলিশের
যতদিন না এসওপি তৈরি হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে রোয়িং বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এসওপি ঠিক মতো মেনে চলা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে নজরদারি চালাবে একটি বিশেষ কমিটি।

চলে গিয়েছে দুটি প্রাণ, তারপরেই তৎপর কলকাতা পুলিশ। ২১ মে রবীন্দ্র সরোবরে রোয়িঙের অনুশীলনের সময় কালবৈশাখী ঝড়ের দাপটে জলে ডুবে দুই স্কুল পড়ুয়া কিশোরের মৃত্যু হয়। তাঁদের প্রাণহানি থেকে শিক্ষা নিয়েছেন সকলে। এবার রোয়িংয়ের ক্রুদের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই বিশেষ নির্দেশিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুলিশ।
লালবাজারে হওয়া বিশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে, আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য রবীন্দ্র সরোবরে রোয়িং অনুশীলন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার কলকাতার চারটি রোয়িং ক্লাবের সদস্য, কলকাতা পুরসভা এবং কেএমডিএর সঙ্গে বৈঠকে বসেন শহরের নগরপাল বিনীত গোয়েল। তিনি জানান, কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এখন থেকে এসওপি মেনে চলতে হবে। যতদিন না এসওপি তৈরি হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে রোয়িং বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এসওপি ঠিক মতো মেনে চলা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে নজরদারি চালাবে একটি বিশেষ কমিটি।
লেকে উদ্ধারকারী বোট মজুত রাখা, লাইফ সেভার ও ডুবুরি মোতায়েন রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে তবেই রোয়িংয়ের অনুমতি দেওয়া, ক্রুদের শারীরিক অবস্থা ইত্যাদি বিষয়গুলি নির্দেশিকার মাধ্যমে নজরে রাখা হবে। প্রসঙ্গত, গত ২২ মে রবীন্দ্র সরোবরে স্কুল পর্যায়ের একটি রোয়িং টুর্নামেন্টের ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। তার আগের দিন বিকেলে বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব, লেক ক্লাব, ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাবের পাঁচটি বোট নিয়ে অনুশীলন করছিল ছাত্ররা। অনুশীলন চলাকালীন সাড়ে চারটে নাগাদ প্রায় ৯০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ে ওঠে। হাওয়ার দাপটে সরোবরের মধ্যেই উলটে যায় রোয়িং বোট। এই ঘটনায় প্রাণ হারায় সাউথ পয়েন্ট স্কুকের নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্র পূষণ সাধুখাঁ এবং সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়।
তল্লাশী চালিয়ে ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় দুই কিশোরের দেহ উদ্ধার করে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর। এই ঘটনায় উঠে এসেছে একাধিক প্রশ্ন, কাদের গাফিলতিতে চলে গেল দুটি প্রাণ। তদন্ত শুরু করছে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও কেন জলে রোয়িং করতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল ছাত্রদের? ভিড় করছে নানান প্রশ্ন। আর যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই বৈঠকে বসেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। সেই কারণেই আপাতত রোয়িং বন্ধ রেখে নির্দেশিকা তৈরির কাজে হাত দিল কলকাতা পুলিশ।