ইউনুসের বাংলাদেশে লস্কর-ই-তৈবার আধিপত্য! ‘বন্ধু’ ভারতকে সতর্ক করলেন হাসিনাপুত্র

November 19, 2025 | 2 min read
Published by: Ritam

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৩০: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন শাসক মহম্মদ ইউনুসের (Muhammad Yunus) আমলে দেশটি পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা (Lashkar-e-Taiba) (লেট)-এর মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় (Sajeeb Ahmed Wazed Joy)। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় ভারতকে সতর্ক করে বলেছেন, এই পরিস্থিতি প্রতিবেশী ভারতের নিরাপত্তাকেও (India’s security) হুমকির মুখে ফেলতে পারে। পাশাপাশি, মাকে আশ্রয় প্রদানের জন্য ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেছেন, কঠিন সময়ে ভারতই হাসিনার প্রাণ রক্ষা করেছে।

সজীব ওয়াজেদ জয়, যিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, সাক্ষাৎকারে জানান, “জঙ্গিরা আমার মাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল বাংলাদেশে। যদি তিনি দেশ ছাড়েননি, তাহলে নিশ্চিতভাবেই তাঁর মৃত্যু হতো। এই কঠিন সময়ে ভারত তাঁর জীবন বাঁচিয়েছে।” তিনি বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী আমার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছেন।” এর পাশাপাশি, তিনি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (International Criminal Tribunal) (আইসিটি) হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্তকে “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” বলে অভিহিত করেন।

জয়ের সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ ইউনুসের শাসনামলে লস্কর-ই-তৈবার বাড়তি প্রভাব নিয়ে। তিনি বলেন, “ইউনুসের আমলে বাংলাদেশ লস্কর-ই-তৈবার মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের মদতপূর্ণ এই জঙ্গিরা সেখানে নির্বিঘ্নে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাচ্ছে।” তিনি আরও দাবি করেন, হাসিনার সরকারের আমলে দণ্ডিত “দশ হাজার হাজার সন্ত্রাসী”কে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যার ফলে চরমপন্থী নেটওয়ার্কগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এমনকি, তিনি দিল্লিতে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী (Delhi red fort blast) হামলা (যেমন ৩ নভেম্বর রেড ফোর্ট ব্লাস্ট)-এর সঙ্গে বাংলাদেশের লেট-সংশ্লিষ্ট স্থানীয় মডিউলের যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করেন। তিনি যোগ করেন “প্রধানমন্ত্রী মোদী নিশ্চয়ই বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন,” ।

জয়ের বক্তব্যে ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশে লস্কর-ই-তৈবা এবং জামায়াত-ই-ইসলামীর মতো চরমপন্থী দলগুলোর শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ভারতের পূর্ব সীমান্তে হুমকি তৈরি করছে। প্রতিবেশী দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তার প্রতিক্রিয়া ভারতেও পড়বেই।” তাই তিনি ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সহযোগিতার উপর জোর দেন।

এছাড়া, বাংলাদেশ সরকারের (Bangladesh Government) হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবিকে জয় “অবৈধ” বলে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাইব্যুনালে ১৭ জজকে অপসারণ করা হয়েছে, আইন অবৈধভাবে সংশোধন করা হয়েছে এবং হাসিনার আইনজীবীদের আদালতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। “এটি একটি রাজনৈতিক অভিযোগ, ভারত এতে সাড়া দেবে না,” তিনি বলেন।

শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (Interim government) চলছে, যা নির্বাচন ছাড়াই ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছে বলে সমালোচনা হচ্ছে। জয় আরও বলেন, এই সরকার “দশ হাজার হাজার রাজনৈতিক বন্দী”কে আটকে রেখেছে, যার মধ্যে ১০০-এর বেশি সাবেক সাংসদ রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) সাম্প্রতিক মন্তব্যকেও উল্লেখ করে জয় বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশে “ইসলামবাদের উত্থান এবং সন্ত্রাসবাদের হুমকি” নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। এই সাক্ষাৎকারের পর ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen