বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ‘সিং’ আখ্যা! হিন্দি ছবিতে বাঙালি মনীষীর অসম্মানে তীব্র প্রতিক্রিয়া মমতার
বলিউড (Bollywood) ছবি ‘কেশরি চ্যাপ্টার ২’ (Kesari Chapter 2)-তে ক্ষুদিরাম বসুকে ভুলভাবে উপস্থাপনের তীব্র নিন্দা করেছেন।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪:১৬: আজ স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর যোদ্ধা ক্ষুদিরাম বসুর (Khudiram Bose) মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯০৮ সালের এই দিনে মাত্র ১৮ বছর বয়সে ব্রিটিশ শাসকের ফাঁসিকাঠে প্রাণ দিয়েছিলেন এই বাঙালি বিপ্লবী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, বলিউড (Bollywood) ছবি ‘কেশরি চ্যাপ্টার ২’ (Kesari Chapter 2)-তে ক্ষুদিরাম বসুকে ভুলভাবে উপস্থাপনের তীব্র নিন্দা করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “একটা কথা লিখি। সম্প্রতি একটি হিন্দি ছবিতে বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ‘সিং’ বলা হয়েছে। স্বাধীনতার জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁদের অপমান করা হচ্ছে কেন? পথিকৃৎ অমর বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ধরেও টানাটানি করবে ভাষা-সন্ত্রাসীরা? আমাদের মেদিনীপুরের অদম্য কিশোরকে দেখানো হয়েছে পাঞ্জাবের ছেলে হিসেবে। অসহ্য! আমরা কিন্তু সবসময় দেশপ্রেম ও সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রতীক এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্মৃতি বিজড়িত মহাবনী ও সংলগ্ন অঞ্চলের আরো বেশি উন্নয়নের জন্য মহাবনী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি করেছি। এছাড়া মহাবনীতে শহীদ ক্ষুদিরামের মূর্তি স্থাপন থেকে শুরু করে পাঠাগার সংস্কার, নতুন একটি সুবিশাল অডিটোরিয়াম, কনফারেন্স রুম – সবই করা হয়েছে। একটি মুক্তমঞ্চও করা হয়েছে। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য নির্মিত হয়েছে আধুনিক কটেজ, ঐতিহ্যবাহী ক্ষুদিরাম পার্কের পুনরুজ্জীবন করা হয়েছে। পুরো এলাকাটাকে আলো দিয়ে সাজানোও হয়েছে। শুধু তাঁর জন্মস্থান মেদিনীপুরেই নয়, এই মহান বিপ্লবীকে শ্রদ্ধা জানাতে কলকাতায় একটি মেট্রো স্টেশনের নামও আমরা ওনার নামে রেখেছি। আমরা গর্বিত।”
ইতিমধ্যে, ‘কেশরি চ্যাপ্টার ২’-এর প্রযোজকদের বিরুদ্ধে কলকাতার বিধাননগর দক্ষিণ পুলিশ স্টেশনে (Bidhannagar South Police Station) একটি মামলা (FIR) দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ, বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস বিকৃত করার।
গত কয়েক মাসে বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও অত্যাচারের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এই প্রেক্ষাপটে, ক্ষুদিরাম বসুর মতো জাতীয় বীরের অবমূল্যায়নের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া এবং বাংলার সংস্কৃতি, ভাষা ও ইতিহাসের মর্যাদা রক্ষায় তাঁর এই অবস্থানকে ঐতিহাসিকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সাধুবাদ জানিয়েছেন।
ক্ষুদিরাম বসু ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সবচেয়ে তরুণ শহিদদের একজন। ১৯০৮ সালে মুজাফফরপুর বোমা মামলায় (Muzaffarpur Bomb Case) ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে (Kingsford) হত্যার চেষ্টার অভিযোগে তাঁর ফাঁসি হয়। তাঁর আত্মত্যাগ ভারতীয় জাতীয়তাবাদী বিপ্লবী আন্দোলনে নতুন প্রেরণা যুগিয়েছিল।