প্লাজমা দান করে নজির হাবড়ার মনামীর

May 28, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ইতিহাস গড়ল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। সাক্ষী থাকল হাবড়া। কোভিডজয়ীর রক্ত থেকে প্লাজমা বা রক্তরস বের করে সংরক্ষণ করার কাজ শুরু করল মেডিক্যালের ব্লাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ। আর প্রথম প্লাজমাদাতা হয়ে ইতিহাসের পাতায় ঢুকে পড়লেন হাবড়ার মেয়ে মনামী বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার মনামীর শরীর থেকে প্লাজমা থেরোসিস পদ্ধতিতে রক্তরস সংগ্রহ করেন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. প্রসূণ ভট্টাচার্য।

গতকাল বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ বাবা মলয় বিশ্বাসের সঙ্গে মেডিক্যালে পৌঁছন মনামী। প্লাজমা থেরাপির জন্য আগেই রক্তদানের যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। এদিন ওজন, রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়। তারপর বাইশ বছরের কোভিডজয়ীকে পাঠানো হয় বিশ্রামে। দুপুর সওয়া একটা নাগাদ শুরু হয় প্লাজমা সংগ্রহের কাজ। চলে দু’টো পাঁচ পর্যন্ত।

প্রসূণবাবু জানিয়েছেন, পূর্ব ভারতে এই প্রথম থেরাপির জন্য কোনও কোভিডজয়ীর প্লাজমা সংগ্রহ করা হল। সেই অর্থে এটা ইতিহাস তো বটেই। খুশি মনামীও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “নজির গড়তে কে না চায়? এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের ধন্যবাদ।”

এদিন প্লাজমা দানের আগে মনামীকে চকোলেট, ফ্রুট জ্যুস, মিল্ক শেক খেতে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চাশ মিনিট ধরে ৪১০ মিলিলিটার প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়। লোহিত রক্ত কণিকা, প্লেটলেট-সহ রক্তের বাকি উপাদান ফের মনামীর রক্তে প্রবেশ করানো হয়। জটিল হলেও এই পদ্ধতি সাধারণ রক্তদানের মতোই সুরক্ষিত। প্রসূণবাবু জানালেন, ডেঙ্গু, থ্যালাসেমিয়া বা লিউকোমিয়ার মতো রোগে এই যন্ত্র ব্যবহার হয়। কিন্তু প্লাজমা থেরাপির জন্য এই প্রথম ব্যবহৃত হল এই ‘সেল সেপারেটর’ যন্ত্র।

আগামী সোমবার আরও একজন প্লাজমা দেবেন। জানা গিয়েছে, এবার প্লাজমা দেবেন টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের এক আঠাশ বছরের এক কোভিডজয়ী চিকিৎসক। প্রসূণবাবু জানালেন, মোটামুটি দশ-বারো পাউচ প্লাজমা হলেই সংকটজনক কোভিড রোগীদের জন্য এই প্লাজমা থেরাপি শুরু করা হবে। সুতরাং মনামীর মতো আরও অনেক প্লাজমাদাতা চাই।

উল্লেখ্য, স্কটল্যান্ডের পড়ুয়া মনামী হাবড়ার বাড়িতে ফেরার পরই করোনায় আক্রান্ত বলে জানা যায়। বাংলার তৃতীয় করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। কঠিন লড়াই জিতে সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন। তারপর থেকেই করোনা চিকিৎসার স্বার্থে প্লাজমা দানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তরুণী। অবশেষে লক্ষ্মীবারে ইচ্ছেপূরণ হল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen