CPI(M): সিপিএম-এর কুকথার ঐতিহ্য – মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় কি সেই ধারাই বহন করছেন?
সামাজিক মাধ্যমের যুগে এই ধরনের মন্তব্য যতই শোরগোল পড়ুক – এই ভাষার রাজনীতি নতুন কিছু নয়, বরং পুরনো দলীয় সংস্কৃতিরই ধারাবাহিকতা।
লিখেছেন শুভম গাঙ্গুলী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:২৬: সম্প্রতি সিপিএমের (CPI-M) যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee) তাঁর এক বক্তব্যে এমন কিছু অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন, যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বিরোধী দলের নেতাদের উদ্দেশে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করছেন।
এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তোলে – মীনাক্ষীর এমন ভাষা কি হঠাৎ করে জন্ম নিল, নাকি এটি আসলে সিপিএমের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিরই অংশ? ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এই ধরণের ‘কুকথা’ বা ‘অপমানজনক (derogatory) ভাষা’ সিপিএমের বহু পুরনো রেওয়াজ।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলার বহু মানুষ আজও মনে রেখেছেন প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ অনীল বসু (Anil Basu) কীভাবে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ব্যক্তিগত আক্রমণের মাধ্যমে ছোট করতে চেয়েছিলেন। এমনকি সিপিএম নেতা বিনয় কোঙ্গার (Binoy Kongar) মন্তব্যও ছিল অত্যন্ত আপত্তিকর। এইসব মন্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিরোধিতার উদাহরণ নয়, বরং তা মানুষের ব্যক্তিগত মর্যাদায় আঘাত হানার নিদর্শন।
শুধু নেতানেত্রীদের ক্ষেত্রেই নয়, এক সময়ের কংগ্রেস (Congress) নেতা অতুল্য ঘোষের (Atulya Ghosh) একটি চোখে সমস্যা ছিল – সেই শারীরিক অক্ষমতাকেও ব্যঙ্গ করেছে সিপিএম কর্মীরা। সিপিএম নেতাদের রসবোধ এতটাই নিচুস্তরে পৌঁছে গিয়েছিল যে তাঁরা এটিকেও কৌতুকের বিষয় বানাতে দ্বিধা করেননি।
আবার, রাজ্যের প্রাক্তন কংগ্রেস মন্ত্রী আভা মাইতি (Abha Maity) যখন গ্রামীণ শিশুদের পুষ্টির জন্য মাইলো পাউডার বিতরণের কথা বলেছিলেন, তখনও তাঁকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছিল সিপিএম। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও (Indira Gandhi) ছিলেন এই কুকথা রাজনীতির শিকার।
এই প্রেক্ষাপটে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভাবার কোনও কারণ নেই। বরং তিনি সম্ভবত সেই পুরনো সিপিএম ‘কালচার’-এরই আধুনিক প্রতিনিধি – যেখানে রাজনৈতিক মতভেদ মানেই ব্যক্তিগত অপমান, এবং ভাষার রুচিশীলতা (decency) বলতে কিছু নেই।
সামাজিক মাধ্যমের যুগে এই ধরনের মন্তব্য যতই শোরগোল পড়ুক – এই ভাষার রাজনীতি নতুন কিছু নয়, বরং পুরনো দলীয় সংস্কৃতিরই (party culture) ধারাবাহিকতা।