কাজের অকাল মোদীর স্বর্গসম যোগিরাজ্যে, বাংলায় চলে আসছে নাবালকরা

গোবলয় থেকে নাবালক ও নাবালিকাদের বাংলায় চলে আসার প্রবণতা বাড়ছে।

August 18, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

করোনাকালে উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে নাবালক-নাবালিকারা কাজের সন্ধানে ছুটে আসছেন বাংলায়। গোবলয়ে কাজের অভাব বাংলায় দেখাতে পারে উপার্জনের রাস্তা, এই মানসিকতা নিয়ে বহু নাবালক পাড়ি দিচ্ছে বাংলার উদ্দেশে। গোবলয় থেকে বাংলার ‘প্রবেশদ্বার’ আসানসোল স্টেশন থেকে উদ্ধার হচ্ছে বহু নাবালক।

জুলাই মাসেই এই স্টেশন থেকে ২০ জন নাবালক-নাবালিকা উদ্ধার হয়েছে। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে ফের তাঁদের নিজের রাজ্যে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় জানুয়ারি মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত মাত্র সাত মাসেই ২১৯জন অপ্রাপ্তবয়স্ককে উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে ৬২জন ভিন রাজ্যের। তবে, শুধু কাজের সন্ধান নয়, প্রেমের টানেও ঘর ছাড়ছে নাবালক-নাবালিকারা। থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর পুলিস তাদের উদ্ধার করছে।

পশ্চিম বর্ধমান চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান রীতা বসু সহ কমিটির একাধিক সদস্যর দাবি, এই জেলায় শিশু উদ্ধারের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ভিন রাজ্যের।

উত্তরপ্রদেশ বা বিহার দুই রাজ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ডবল ইঞ্জিনের সরকারে নাকি উন্নয়নের জোয়ার বইছে বলে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের দাবি। কিন্তু করোনাকালে শিশু উদ্ধারের ঘটনায় তার উল্টো চিত্রই সামনে আসছে। গোবলয় থেকে নাবালক ও নাবালিকাদের বাংলায় চলে আসার প্রবণতা বাড়ছে। সরকারি পরিসংখ্যান থেকেই তা স্পষ্ট হয়েছে। ২০১৯ সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ৩৫ জন ভিন রাজ্যের অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্ধার হয়েছিল। ২০২০ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ৪৪। চলতি বছরে অবশ্য সব রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। সাত মাসেই ৬২ জন নাবালক নাবালিকা উদ্ধার হয়েছে। যাদের অনেকেই জানিয়েছে, কাজের সন্ধানেই বাংলায় এসেছে তারা। বিশেষ করে বিহার ও ঝাড়খণ্ডে এখনও এই কথার চল রয়েছে যে, আসানসোলের খনি অঞ্চলে গেলেই আর্থিক উপার্জনের রাস্তা খুলে যাবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করছে আসানসোল স্টেশনের আরপিএফ ও চাইল্ড লাইন। নাবালক নাবালিকাদের উপর বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে। সন্দেহ হলেই চাইল্ড লাইনের মাধ্যমে তাদের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে আনা হচ্ছে।

তবে, শুধু ভিন রাজ্যেরই নয়, ভিন জেলার বহু নাবালিকা, নাবালক শিল্পাঞ্চলে উদ্ধার হচ্ছে। তা প্রশাসনের কাছে যথেষ্ট উদ্বেগের। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে মোট ১৮১ জন নাবালক নাবালিকা উদ্ধার হয়েছে। ২০২০ সালে ২৯৭ জন নাবালক নাবালিকা উদ্ধার হয়েছে। এবার সাত মাসেই ২১৯ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক উদ্ধার হয়েছে জেলায়।

সেক্ষেত্রে আর্থিক অনটন বড় কারণ হিসেবে সামনে আসছে। শিল্পাঞ্চলের এই জেলায় অনেকেই কাজের সন্ধানে হাজির হচ্ছে। তেমনই প্রেমের টানও বড় কারণ হিসেবে উঠে আসছে। করোনা পরিস্থিতিতে গত প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল কলেজ বন্ধ রয়েছে। এমনকী টিউশনিও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। ফলে প্রেমিক প্রেমিকাদের দেখা হওয়ার সুযোগ কমে গিয়েছে। তাই অনেকেই প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছাড়ছেন। তবে, বর্তমানে নাবালক নাবালিকাদের বিপথে চলে যাওয়া রুখতে সক্রিয় হয়েছে চাইল্ড লাইন থেকে পুলিস প্রশাসন। কিছুদিন আগে কুলটির লছিপুরে নিষিদ্ধ পল্লিতে অভিযান চালিয়ে বহু নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ভিন দেশেরও কয়েকজন রয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen