এয়ার ইন্ডিয়ার পর এবার বিপিসিএল, শিপিং কর্পোরেশন বিক্রি করতে চায় মোদী সরকার

মোদী সরকারের লক্ষ্য, ছ’মাসের মধ্যে সরকারি সংস্থা বিক্রির সিংহভাগ পাট চুকিয়ে ফেলা।

October 10, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

এয়ার ইন্ডিয়ার ‘বোঝা’ মাথা থেকে নামিয়েই নতুন লক্ষ্যে ছুটতে শুরু করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রথমেই ভারত পেট্রলিয়াম, শিপিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া, কন্টেনার কর্পোরেশন, স্টিল অথরিটি অব ইন্ডিয়া (সেইল), হিন্দুস্তান কপারের মতো একঝাঁক সংস্থাকে সম্পূর্ণ অথবা আংশিক বিক্রির টার্গেট নিয়েছে কেন্দ্র। আর এ ব্যাপারে আগামী সপ্তাহ থেকেই সক্রিয় হচ্ছে অর্থমন্ত্রকের বিলগ্নিকরণ বিভাগ।

মোদী সরকারের লক্ষ্য, ছ’মাসের মধ্যে সরকারি সংস্থা বিক্রির সিংহভাগ পাট চুকিয়ে ফেলা। অর্থমন্ত্রক এবং নীতি আয়োগের বেসরকারিকরণের প্রস্তাবিত তালিকায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, ব্যাঙ্ক এবং বিমা সংস্থা। এয়ার ইন্ডিয়া বিক্রি করতে নেমে দীর্ঘ সময় ঘোল খেতে হয়েছে কেন্দ্রকে। একে তো ৬১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকার ঋণের বোঝা। তার উপর ক্রেতা খুঁজে পাওয়া নিয়েই বিস্তর জটিলতা। অবশেষে ১৮ হাজার কোটি টাকায় মোদী সরকারকে দায়মুক্ত করেছে টাটা গোষ্ঠী। তার মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ বহন করবে টাটা। বাকি ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা নগদ পাবে কেন্দ্র। সুতরাং বাকি থাকল আরও ৪৩ হাজার ৫৬২ কোটি টাকার ঋণ। সেই অর্থ মেটাতে হবে কেন্দ্রকেই। এর মধ্যেও অবশ্য এয়ার ইন্ডিয়ার সম্পত্তি, বিল্ডিং, হোটেল ইত্যাদির মালিকানা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেই থাকছে। এগুলি বিক্রি করে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা আয়ের চেষ্টা করবে কেন্দ্র। এরপরও অবশ্য মোদী সরকারের কাছে সবথেকে স্বস্তির বিষয়, এয়ার ইন্ডিয়াকে আর বহন করতে হচ্ছে না। ৬৮ বছর পর সেই টাটা গোষ্ঠীর হাতে এয়ার ইন্ডিয়াকে সমর্পন করছে মোদী সরকার। মুক্তি মিলছে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকার পাহাড়প্রমাণ লোকসান থেকেও। কেন্দ্র
আশা করছে, এয়ার ইন্ডিয়া হস্তান্তর সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া সমাপ্ত হবে ডিসেম্বরের মধ্যেই। সেই ‘সাফল্যে’র উচ্ছ্বাসেই এবার বাকি বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়ায় গতি আনতে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে কেন্দ্রীয় সরকার।

বিপিসিএল, শিপিং কর্পোরেশনের মতো সংস্থাগুলির খদ্দের নিশ্চিত হওয়ার অপেক্ষা। তারপর, অর্থাৎ জানুয়ারি মাসেই এলআইসির শেয়ার বিক্রি এবং আইডিবিআই ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে ঝাঁপাবে কেন্দ্র। পাশাপাশি রয়েছে নীলাচল ইস্পাত লিমিটেড, পবন হংস এবং বিইএমএল। আগামী বছর অন্তত দু’টি ব্যাঙ্ক এবং একটি সরকারি বিমা সংস্থা বেলগ্নিকরণের কথা ভাবা হয়েছে। আইডিবিআই ছাড়া আরও দু’টি ব্যাঙ্ক আপাতত তালিকায় রয়েছে। অর্থমন্ত্রক ঠিক করেছে, আগামী দিনে সরকারের হাতে কয়েকটি মাত্র ব্যাঙ্ক থাকবে। ‘লাভজনক’ করে তোলার জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু ব্যাঙ্কের আবার সংযুক্তিকরণের চেষ্টা হবে। আর তারপর মূল টার্গেট—বেসরকারিকরণ।

মোদী সরকারের চলতি আর্থিক বছরের লক্ষ্য, বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা আয়। আগস্ট মাস পর্যন্ত সরকারি সংস্থা বিক্রি করে সরকারের আয় হয়েছে মাত্র সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। এর সঙ্গে অবশ্য এবার যুক্ত হচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিক্রির অর্থ। অর্থাৎ আরও ১৮ হাজার কোটি। নয়া বিলগ্নিকরণ কর্মসূচিতে সবথেকে বেশি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে এলআইসিকে ঘিরে। অন্তত ১ লক্ষ কোটি টাকা আয়ের টার্গেট ধরা হয়েছে শুধু জীবন বিমা নিগমের শেয়ার বিক্রি করেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen