মোদি-শাহ নির্বাচনে জিততে পারেন, শাসন করতে পারেন না

এই অবস্থাতেও বাংলার নির্বাচনকে জীবন মরণ সমস্যা বানিয়ে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রোজ বাংলায় এসে সভা করেছেন। এতো কিছুর পরেও মোদী জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকবেন। কারণ মানুষ খুব তারাতারি সব ভুলে যায়।

April 29, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

দৃষ্টিভঙ্গির জন্য কলম ধরলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা যশোবন্ত সিন্হা।

প্রকোপ হারিয়ে যাওয়া মহামারী আরও একবার লেলিহান শিখা মেলে ধরেছে। দেশে যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা দিনে দশ হাজারেরও কমে এসে ঠেকেছিল, এখন তা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। এবিষয়ে এক জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) সহ সভাপতি যশোবন্ত সিনহা (Yashwant Sinha)। তিনি ঠিক কী বললেন তাঁর ভাষাতেই দেখে নেওয়া যাক।

‘এবছর ফেব্রুয়ারির শুরুতেই আবার মাথা চারা দিয়ে ওঠা শুরু করেছিল মহামারী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয়মন্ত্রীরা সেই বিপদকে উপেক্ষা করেছেন। দেশের মহামারী পরিস্থিতি সামলানোর থেকেও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে তাঁরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এমনকী বিজেপির তরফ থেকে করোনা তাড়ানোর জন্যে প্রধানমন্ত্রীর ওপর প্রশংসার ফুল বর্ষিত হয়েছে। বিজেপি (BJP) বলেছে তারা প্রধানমন্ত্রীর জন্যে গর্বিত।

এর আগে এভাবে স্বাস্থ্যের জরুরী অবস্থা দেখেনি এই দেশ। সরকার অসহায়। মহামারীকে আটকানোর কোন সুষ্ঠ পরিকল্পনা নেই তাদের কাছে। আমার মতো মানুষ, যাদের প্রায় কোন ক্ষমতাই নেই তারাও পরিচিতদের ফোন পাচ্ছেন হাসপাতালে বেড, অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্যে। শ্মশান, গোরস্থানের বাইরে লাইন পড়ছে। মৃত্যুর পরেও শান্তি পাচ্ছেন না মানুষগুলো। সিস্টেম ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় পৌঁছে গেছি আমরা। দিল্লি হাইকোর্ট পরিষ্কার বলেছে অক্সিজেন পাওয়া মানুষের অধিকার। এর ব্যবস্থা কেন্দ্র সরকারকেই করতে হবে।

ভারত সরকারের কোন ব্যবস্থাই নেই এই অবস্থাকে সামলানোর। যেখানে ব্রাজিলের মতো দেশগুলির দুরাবস্থার উদাহরণ তাদের কাছে ছিল তাও তারা কোন শিক্ষা নেয় নি।

এই অবস্থাতেও বাংলার নির্বাচনকে জীবন মরণ সমস্যা বানিয়ে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রোজ বাংলায় এসে সভা করেছেন। এতো কিছুর পরেও মোদী জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকবেন। কারণ মানুষ খুব তারাতারি সব ভুলে যায়।

সব চেয়ে ভয়ের বিষয় এই ঘটনার দায় নিচ্ছে না সরকার। ‘গোদি মিডিয়া’ রা প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে। সাংবাদিকরা অন্যায় বুঝেও এটা করছেন কারণ এটা তাদের টিকে থাকার লড়াই। যারাই বিরুদ্ধাচরণ করেছেন তাদের সবাইকেই বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা দেখানো হয়েছে। কারণ সব সংবাদ মাধ্যমের মালিকরাই সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স, ইডি হানার ভয় পান। এর মাঝেও কোন কোন সাংবাদিক স্রোতের উল্টোদিকে হেটে বিজেপির ভুল ধরিয়ে দিচ্ছেন। চারিদিকে এমন একটা প্রচার যেন মোদী ত্রুটিহীন। তাঁর কী করে কোন ভুল থাকতে পারে!

লোকসভাতেও বিরোধীদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। ওদের সুবিধে মতো লোকসভার অধিবেশন হয়। ওরা যা খুশি তাই করে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে খর্ব করা হচ্ছে। কোন প্রতিবাদ না করেই কী আমাদের মৃত্যু বরণ করা উচিৎ?

রাজনীতিতে মোদী- শাহর কোন জুড়ি নেই। তাঁরা খুব ভালো করে জানেন নির্বাচন কী ভাবে জিততে হয়। কিন্তু দেশ চালাতে জানেন না তাঁরা। বাংলায় রোজ জনসভা না করে মোদী- শাহ যদি মহামারী নিয়ে একটু ভাবতেন তাহলে আজ দেশের এই অবস্থা হত না। অক্সিজেন, চিকিৎসা না পেয়ে মারা যেতেন না মানুষগুলো এভাবে। যারা অক্সিজেনের অভাবে নিজের আপনজনকে হারিয়েছে তাঁরা কী কখনো এই সরকারকে ক্ষমা করতে পারবেন?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen