Nimisha Priya Blood Money: কী এই ‘রক্তমূল্য’ যা বাঁচাতে পারে নিমিষা প্রিয়ার প্রাণ?

July 15, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১:১৫: ভারতীয় বংশোদ্ভূত নার্স নিমিষা প্রিয়ার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ডের দিন এগিয়ে আসছে। ২০১৮ সালে ইয়েমেনের (Yemen) এক নাগরিককে হত্যার অভিযোগে নিমিষাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আগামী ১৮ই জুলাই তাঁর শাস্তি কার্যকর হওয়ার কথা। এই অবস্থায় তাঁকে বাঁচানোর একমাত্র রাস্তা হয়ে উঠেছে ইসলামিক শরিয়ত আইনের (Islamic Sharia Law) ‘ব্লাড মানি’ বা ‘দিয়া’ (Diya) অথবা ‘রক্তমূল্য’।

কী এই ‘ব্লাড মানি’ (Blood Money)?

ইসলামিক শরিয়ত আইন অনুসারে, ব্লাড মানি অর্থাৎ ‘দিয়া’ হল এমন এক আর্থিক ক্ষতিপূরণ যা কোনও গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে, বিশেষত হত্যার (Murder) ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি নিহতের পরিবারকে দিয়ে থাকে। শরিয়ত অনুযায়ী, হত্যাকে দু’ভাগে ভাগ করা হয় – একটি ইচ্ছাকৃত (Intentional Murder), অপরটি ভুলবশত (Mistaken Killing)।

এই ব্যবস্থায় অপরাধীর ভাগ্য নির্ধারণ করেন নিহতের পরিবার। আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোনও অর্থমূল্য ধার্য নেই। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আলোচনা করে নির্ধারিত হয়, এবং নিহতের পরিবারের সম্মতিতে অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড রদও হতে পারে।

কীভাবে জড়ালেন নিমিষা প্রিয়া?

নিমিষা প্রিয়া, কেরলের (Kerala) বাসিন্দা ও পেশায় নার্স, ইয়েমেনে নিজের ব্যবসায়িক অংশীদার তালাল আবদো মাহদিকে (Talal Abdo Mahdi) হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। অভিযোগ, ব্যবসায়িক বিরোধ থেকেই এই হত্যা। নিমিষাকে ঠকাচ্ছিলেন মাহদি, এবং তাঁকে ঘুম পাড়িয়ে কাগজ হাতানোর চেষ্টা করেছিলেন নিমিষা। কিন্তু, ঘুমের ওষুধের মাত্রা বেশি হয়ে যাওয়ায় মাহদির মৃত্যু হয়।

ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রশাদ আল আলিমি (President Rashad al-Alimi) চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিমিষা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডে সিলমোহর দেন।

এই ঘটনায় ভারতের (India) ভূমিকা সীমিত। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্রীয় সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ইয়েমেনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত দুর্বল, ফলে সরকার কিছু করতে পারছে না। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামণি (Attorney General R Venkataramani) বলেন, “ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে, তবে কূটনৈতিক সংযোগের অভাবে আমরা অনেক সীমাবদ্ধ।”

নিমিষার মা প্রেমাকুমারী (Premakumari) এপ্রিল ২০২৪ থেকে ইয়েমেনে আছেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিবার ও একটি নাগরিক সংগঠন ‘সেভ নিমিষা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল’ (Save Nimisha Priya International Action Council) ধারাবাহিকভাবে নিহতের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে তারা ‘দিয়া’ গ্রহণ করে।

সংগঠন বহুল অর্থ সংগ্রহ করেছে। সেই অর্থ রক্তমূল্য হিসেবে নিহতের পরিবারকে দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (CM Pinarayi Vijayan) একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (PM Narendra Modi) চিঠি লিখেছেন নিমিষার জন্য কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে। কিন্তু কেন্দ্র স্পষ্ট করেছে, আইন ও কূটনৈতিক কারণে তারা খুব বেশি কিছু করতে পারছে না।

১৮ই জুলাইয়ের (July 18) আগে কোনও সমঝোতা না হলে, নিমিষার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই অবস্থায় ব্লাড মানিই এখন তাঁর একমাত্র আশার আলো।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen